বহিঃশত্রুকে ধরাশায়ী করতে শক্তিশালী নৌবাহিনী কিন্তু অপরিহার্য। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ভারতের তিন বাহিনী। সন্ত্রাসবাদীদের নিশ্চিহ্ন করতে প্রয়োজনে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সামরিক অভিযান চালাতেও ভারত প্রস্তুত। বাতাসে তাই যুদ্ধের গুঞ্জন। আচ্ছা নৌশক্তিতে ভারতের সাথে কি আদৌ পাল্লা দিতে পারবে পাকিস্তান? কী বলছে তথ্য ও পরিসংখ্যান?

গ্লোবাল নাভাল র্যাঙ্কিং বা বিশ্বে নৌশক্তিতে ভারতের স্থান বর্তমানে ছয় নম্বরে। পাকিস্তান অনেক পিছিয়ে সাতাশে। পাকিস্তানের নৌবহরে মাত্র ১২১টি জাহাজ। ভারতের আছে মোট ২৯৩-টি জাহাজের একটা শক্তিশালী ফ্লিট। বৈচিত্র্য, সংখ্যা, শক্তি, প্রযুক্তি ও আধুনিকতা- সব দিক দিয়েই এগিয়ে ইন্ডিয়ান নেভি।

ভারতের আছে দুটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বা বিমানবাহী রণতরী। পাকিস্তানের কাছে একটিও এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নেই। ‘আইএনএস বিক্রমাদিত্য’ ও ‘আইএনএস বিক্রান্ত’- এই দুই বিমানবাহী রণতরী নিঃসন্দেহে ভারতীয় নৌবাহিনীর অহঙ্কার আর শত্রু শিবিরের আতঙ্ক। ভারতের নৌবাহিনীতে সদ্য যুক্ত হয়েছে ২৬ টি অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান। যা ‘আইএনএস বিক্রমাদিত্য’ ও ‘আইএনএস বিক্রান্তের’ শক্তিকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম।

নৌযুদ্ধে বাজিমাত করতে সাবমেরিন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ইন্ডিয়ান নেভির আছে ১৮ টি সাবমেরিন। পাকিস্তান নৌবাহিনীর হাতে মাত্র ৮ টি সাবমেরিন। পাকিস্তানের ৮ টি সাবমেরিনই আবার ডিজেল-ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে চলে। মান্ধাতার আমলের এইসব সাবমেরিন প্রযুক্তি নির্ভর অত্যাধুনিক মিসাইল ও পারমাণবিক অস্ত্র বহনে অক্ষম।

পক্ষান্তরে ভারতের নৌবাহিনীতে রয়েছে দুটি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন- ‘আইএনএস অরিহন্ত’ ও ‘আইএনএস অরিঘাত’। এই দুই সাবমেরিন থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম অত্যাধুনিক গাইডেড ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়ে শত্রুকে ধ্বংস করা সম্ভব। এছাড়াও তৃতীয় প্রজন্মের নিউক্লিয়ার পাওয়ার্ড সাবমেরিন আইএনএস ‘অরিধামান’ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের পথে।

দুটি বিমানবাহী রণতরী, ১৬টি ডিজেল-ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন ও দুটি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন ছাড়াও এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ান নেভির নৌবহরে রয়েছে ১৩টি ডেস্ট্রয়ার ও ১৪টি ফ্রিগেট। ১৮ টি করভেট ও ১৩৫টি প্যাট্রোল ভেসেল। অন্য দিকে পাকিস্তানের নৌবহরে রয়েছে মাত্র ৯-টি ফ্রিগেট, ৯টি করভেট ও ৬৯টি প্যাট্রোল ভেসেল। বোঝাই যাচ্ছে ধারে-ভারে ভারতের ধারেকাছেও নেই পাকিস্তানের নৌবাহিনী।

একাত্তরের যুদ্ধে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাফল্যের কাহিনী আজ ইতিহাস। ২০২৫-এও হিন্দুস্তানের নৌবাহিনী শত্রুকে সমুচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই আরব সাগরের নীল জলে শত্রুর চোখে চোখ রেখে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভারতের নৌবহর।
Feature image is representational and collected.