Doomsdayfish: এই মাছ ভেসে উঠলেই কি দুয়ারে বিপদ? অরফিশ নিয়ে কেন এত আতঙ্ক মানুষের?

Doomsdayfish: এই মাছ ভেসে উঠলেই কি দুয়ারে বিপদ? অরফিশ নিয়ে কেন এত আতঙ্ক মানুষের?


ইনফোয়ানা ফিচার: আবার দেখা মিলল সেই রহস্যময় মাছের। মাছের নাম শুনলেই চমকে যায় পিলে। ‘ডুমস ডে ফিশ’। অর্থাৎ কেয়ামতের দিনের মাছ। প্রকৃতির ধ্বংসযজ্ঞের আগে গভীর সমুদ্র থেকে এই মাছ নাকি উপরে ভেসে উঠে। মাছটির আসল নাম ‘অর ফিশ’। বৈজ্ঞানিক নাম ‘রেগালেকাস গ্লেসনে’। সমুদ্রের ৭০০ থেকে ৩,৩০০ ফুট গভীরে বসবাস করায় সচরাচর মানুষের চোখের আড়ালেই থাকে অরফিশ।‌

দেখতে সত্যিই কিম্ভুতকিমাকার মাছটি। দেহ যেন স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি। লম্বায় সর্বোচ্চ ৩৬ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। একে ধ্যাড়ধেড়ে লম্বা তায় মাথার দু’পাশে বিরাট দুটি গোল গোল চোখ। দেখে আত্মারাম খাঁচা হবার‌ই কথা। দেহটি ফিতার মতো লম্বা বলে একে ‘রিবন ফিশ’ও বলা হয়। জাপান, ফিলিপাইন ও কোরিয়ার ‘লোককথায়’ মাছটিকে ঘিরে অনেক কাহিনী আছে। অরফিশের জাপানি নাম, ‘রিউগু নো সুকাই’, বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘সমুদ্র দেবতার বার্তাবাহক’।

ডুমসডেফিশ অর্থাৎ ধ্বংসের দিনের মাছ। প্রকৃত নাম ‘অরফিশ’। মাছটির দেহ যেন স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি। সংগৃহীত ছবি

‘অর ফিশ’ ভেসে উঠতে দেখলেই প্রমাদ গুনতে শুরু করেন জাপান-ফিলিপাইনের উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। ভূমিকম্প -সুনামির আগে সতর্কবার্তা দিতেই এই মাছ উপরে ভেসে উঠে বলে তাদের বিশ্বাস। ফিলিপাইনে ২০১৭-র বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং জাপানে ২০১১ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির আগে ‘ডুমস ডে ফিশ’ দেখা গিয়েছিল বলে জানা যায়।

প্রাচীন যুগ থেকেই এই অদ্ভুত দর্শন গভীর সমুদ্রের মাছকে নিয়ে রহস্য। সত্যিই কি ‘অরফিশ’ ভূমিকম্প-সুনামির বার্তা বয়ে আনে? ভয়াবহ বিপর্যয়ের সংকেত কি আগেই টের পেয়ে যায় মাছটি? সাধারণ মানুষের মনে অরফিশ নিয়ে নানা সংস্কার থাকলেও বিজ্ঞানী মহল কিন্তু এখনও নিশ্চিত নন যে এই মাছ ভূমিকম্প-সুনামির পূর্বাভাস বুঝতে সক্ষম। ২০১৩ সালে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে ঝাঁকে ঝাঁকে ‘অরফিশ’ ভেসে উঠলেও সে’বার ক্যালিফোর্নিয়ায় কোন‌ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে নি।

তবে সমুদ্রের গভীর থেকে অরফিশের উপরে ভেসে ওঠার ঘটনাকে হাল্কাভাবেও‌ নিচ্ছেন না গবেষকরা। দূষণ বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণের কারণে গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হ‌ওয়ায় অরফিশের স্বাভাবিক জীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গভীর সমুদ্রের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গভীর সমুদ্রের আরও অনেক জীবের মতো অরফিস‌ও তাই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছে। গভীর সমুদ্রেও মানুষের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। সমুদ্রের গভীরে ঘন ঘন অভিযান ও মাছ শিকার অরফিশের মতো গভীর সমুদ্রের প্রাণীদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।

গভীর সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় অরফিশের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা। সংগৃহীত ছবি

অরফিশকে ‘ডুমসডে ফিশ’ বা , ‘রিউগু নো সুকাই’, যে নামেই ডাকা হোক, মোট কথা মাছটিকে ঘিরে মানুষের মধ্যে রহস্য আছেই।

‘ডুমসডেফিশ’ নিয়ে ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন-

Feature graphic designed by NNDC. Vide Credit- Infoyana YouTube channel.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *