রুশ আক্রমণের জেরে ইতিমধ্যেই দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিকাঠামোর এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফের রাজধানী কিয়েভ সহ ইউক্রেনের বড় বড় শহরগুলির উপর তীব্র আক্রমণ চালালো রাশিয়া। সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে এই হামলার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দফতরের সহকারী প্রধান কাইরাইলো টিমোশেঙ্কো। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের জেরে কিয়েভ, ভিনিৎসিয়া, নিপ্রোপেত্রোভস্ক, জাপোরিঝঝিয়া, ওয়েস্ট লিভিভ এবং খারকিভের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলে ইউক্রেনিয়ান কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হওয়ায় রাজধানী কিয়েভ সহ বহু শহরে জল সরবরাহ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2022/10/221031-ukraine-missiles-kyiv-mb-0914-4ce8bc-1024x689.jpg)
স্থল আক্রমণে বিশেষ সুবিধা করে উঠতে না পেরে এখন ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিকাঠামোকে ধ্বংস করে দেওয়াই রাশিয়ার লক্ষ্য হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। এই কাজে রাশিয়া ব্যবহার করছে ইরান থেকে কেনা কামিকাজে ড্রোন। আক্রমণের কথা জানিয়ে জেলেনস্কির সহকারী কাইরাইলো টিমোশেঙ্কো টেলিগ্রামে লিখেছেন, “রুশ সন্ত্রাসবাদীরা ফের ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।” ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রগুলিতে আগুন ধরে যায়। রুশ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে আমেরিকার কাছ থেকে উন্নত অ্যান্টি মিশাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের অ্যান্টি মিশাইল ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধোঁকা দিতে ইরানের কামিকাজে ড্রোন কাজে লাগাচ্ছে রাশিয়া। এই ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার সাথে সাথেই ধ্বংস হয়ে যায়।
রুশ আক্রমণের জেরে ইতিমধ্যেই দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিকাঠামোর এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবারের সর্বশেষ হামলার পর কিয়েভের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, “গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোতে হামলা হওয়ায় রাজধানীর ৮০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। কিছু এলাকায় জল সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে।”
জ্বালানি পরিকাঠামোর উপর উপর্যপুরি রুশ হামলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সমাজের সাহায্য চাইছেন জেলেনসস্কি। কিন্তু রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে বড় কোনও সংঘাত বেঁধে যাওয়ার ভয়ে কেউই বিশেষ জড়াতে চাইছে না। ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে বোমা হামলার পর থেকেই পুতিন ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন। সেতুতে ট্রাক বোমা হামলার জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করেছে রাশিয়া। শনিবার বন্দরনগরী সেভাস্তোপোলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় তাদের একটি যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই হামলার বদলা নিতেই সোমবার ইউক্রেন জুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Photo Credit- Reuters/ The Washington Post.