প্রয়াগরাজ: পৃথিবীর বৃহত্তম আধ্যাত্মিক জমায়েতের নাম কুম্ভমেলা। ১২টি পূর্ণকুম্ভ শেষে ১৪৪ বছর পরে প্রয়াগরাজে এবার মহাকুম্ভ। মঙ্গলবার মকর সংক্রান্তির ভোর থেকে মহাকুম্ভে চলছে প্রথম শাহি স্নান। প্রথম শাহি স্নানেই ভাঙল অতীতের সব রেকর্ড। এদিন বিকেল তিনটে পর্যন্ত প্রয়াগের ত্রিবেণী সঙ্গমে সাড়ে তিন কোটি পুণ্যার্থী স্নান করেছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

হাড় কাঁপানো শীত, ঘন কুয়াশা- কোনও বাধাই মুমুক্ষু মানুষের ত্রিবেণী সঙ্গম মুখী ঢলকে আটকে রাখতে পারে নি। চিরাচরিত প্রথা মেনে সবার প্রথমে স্নান করেছেন নাগা সন্ন্যাসীরা। এরপর বিভিন্ন আখড়ার সাধুসন্তরা। সাধু-সন্ন্যাসী-মোহন্তদের স্নান শেষ হওয়ার পর জলে নামার সুযোগ পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, মহাকুম্ভের প্রথম শাহি স্নান নির্বিঘ্ন করতে ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সহ সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত ৪০০০ হেক্টরের বিশাল মেলা চত্বরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পৌষ পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হওয়া কুম্ভমেলা শেষ হবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মহা শিবরাত্রি তিথিতে। ৪৪ দিন ধরে চলা মহাকুম্ভে ৪৫ কোটি পুণ্যার্থী অংশ নেবেন। পৃথিবীর আর কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এত মানুষের জমায়েতের নজির নেই। প্রয়াগরাজের মেলা চত্বরে দেড় লক্ষ তাঁবু পড়েছে। মোতায়েন থাকবে ৪০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী। ২ হাজার ৭৫১ টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে মেলা চত্বরে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এআই প্রযুক্তিকেও কাজে লাগানো হচ্ছে।

গোটা মেলা চত্বরকে ২৫টি জোনে ভাগ করে ২০টি উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোনের সাহায্যে কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘন্টা প্রতিটি খুঁটিনাটি ঘটনার উপরে কড়া নজর রাখছে পুলিশ। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধেও মেলা চত্বরে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রেখেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। মহাকুম্ভের পরবর্তী শাহি স্নান আগামী ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যা তিথিতে। তৃতীয় শাহি স্নান ৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে। ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে হবে চতুর্থ শাহি স্নান। ২৬ ফেব্রুয়ারি মহা শিবরাত্রি তিথিতে শেষ শাহি স্নান দিয়ে শেষ হবে মহাকুম্ভ মেলার।
Feature image source- X handle.