আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচির রাস্তায় রাস্তায় দেহ পড়ে থাকছে। এখনও পর্যন্ত ২২টি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার উদ্ধার হয়েছে পাঁচটি দেহ। গত কয়েকদিন ধরে রোজই করাচির কোনও না কোনও এলাকার রাস্তায় দেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। রহস্যময় এই মৃত্যুর ঘটনায় করাচির জনজীবনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘জিয়ো নিউজ’ জানিয়েছে। করাচি পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর ও বন্দরনগরী। সিন্ধ প্রদেশের রাজধানী করাচির আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বরাবরই পাকিস্তান সরকার উদ্বিগ্ন। রোজ রোজ রাস্তায় দেহ পড়ে থাকার ঘটনাকেও স্বাভাবিক বলে মনে করছে না করাচির পুলিশ।
তীব্র দাবদাহে পাকিস্তান অস্থির। করাচিতেও ভয়ঙ্কর গরম পড়েছে। শহরটিতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বাস। লাগাতার তাপপ্রবাহ করাচিবাসিদের নাজেহাল অবস্থা। বহু লোক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাপপ্রবাহের কারণেই ওই বাইশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে প্রশাসন। তবে নেশাগ্রস্তরাই গরমে অসুস্থ হয়ে বেশি মরছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। পাকিস্তানে মদ নিষিদ্ধ কিন্তু তরুণ প্রজন্ম মাদকে বুঁদ। ‘ক্রিস্টাল মেথামফেটামিন’ নামে একটি মাদক করাচি সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরের যুবকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি দামে সস্তা কিন্তু শরীরের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর।

ফুটপাত থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলির কোনও দাবিদার নেই। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইদি ফাউন্ডেশন’-এর আধিকারিক আজিম খান জানিয়েছেন, মৃতরা ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত। কড়া মাদক নেওয়ার কারণে চড়া তাপ সহ্য করতে পারে নি বলেই এদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। সম্প্রতি করাচির এক প্রবীণ নাগরিককে মাদকাসক্তরা পিটিয়ে আধমরা করেছে। ওই ব্যক্তির বাড়ির সামনে বসে মাদক সেবন করছিল কয়েকজন যুবক। বাড়ির মালিক বেরিয়ে এসে বাধা দিলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটায় মাদকাসক্তরা।
‘ক্রিস্টাল মেথামফেটামিন’ বাজারে আইস নামেও পরিচিত। এর প্রভাবে তীব্র নেশা হওয়ার পাশাপাশি শরীরে সাময়িক বিপুল উদ্দীপনা জাগে। এই কারণেই করাচির যুবকদের মধ্যে ড্রাগটির বিরাট চাহিদা। কিন্তু শরীর ও মনের উপর মারাত্মক কুপ্রভাব ফেলায় এই মাদকের কারণে সমাজ উচ্ছন্নে যাচ্ছে বলে উদ্বিগ্ন পাকিস্তানের নাগরিক সমাজ।
Feature image is representational.