পাঁকাল মাছের মতো হড়কে যাচ্ছিলেন, অবশেষে নিয়োগ ঘোটালায় ইডির জালে মানিক - nagariknewz.com

পাঁকাল মাছের মতো হড়কে যাচ্ছিলেন, অবশেষে নিয়োগ ঘোটালায় ইডির জালে মানিক


কলকাতা : গ্রেফতারি এড়াতে মেলা চেষ্টা করেছিলেন।‌ সুপ্রিম কোর্টের দরজায় গিয়ে পর্যন্ত কড়া নেড়ে এসেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মফল খন্ডাতে ব্যর্থ মানিক। রাতভর জেরার পর মঙ্গলবার সক্কাল সক্কাল মানিক ভট্টাচার্যকে হেফাজতে নিল‌ ইডি। মানিক ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির চেয়ারে ছিলেন। তিনি পলাশিপাড়া থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের বিধায়ক‌ও। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-সিবিআইয়ের সাম্প্রতিক তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে অতি দ্রুত‌ই তদন্তের ‌জাল গুটিয়ে আনতে চাইছেন দুই সংস্থার আধিকারিকেরা।

প্রাথমিকের নিয়োগ ঘোটালা নিয়ে মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল দীর্ঘদিন থেকেই। যদিও চতুর মানিকের এমন হাবভাব, যেন তিনি কিছুই জানেন না। মানিককে একাধিকবার জেরা করেছে সিবিআই-ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট প্রমাণ কেন্দ্রীয় এজেন্সি দুটির আধিকারিকদের হাতে এসেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এরপর আর তাঁকে বাইরে ঘোরাফেরা করার সুযোগ দিতে মোটেই রাজি নন তদন্তকারীরা। হাইকোর্টের নির্দেশে কবেই মানিকের পদ গেছে। কিন্তু একে একে পার্থ-অর্পিতা-কল্যাণময়-শান্তিপ্রসাদের পর উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য‌কে ইডি-সিবিআই গারদে ভরতে পারলেও পিছলে পিছলে যাচ্ছিল কেবল এই মানিক। কপালে শনি আছে, বুঝতে পেরেই দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রক্ষাকবচ চেয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্রীঘরে তাঁকে যেতেই হল।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আদালতে একটি চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেই চার্জশিটে মানিক ভট্টাচার্যের নাম রয়েছে। চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে মানিক যে হাত পেতে টাকা নিচ্ছেন, এই খবর পাওয়ার পরেও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী চুপ ছিলেন বলে প্রমাণ মিলেছে। খুব সম্ভবত ভাগা পাওয়ার পরেই বিষয়টি চেপে যান পার্থ। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে মানিক আর পার্থতে এস‌এম‌এস আদান-প্রদানের প্রমাণ‌ও চলে এসেছে সিবিআই-ইডির হাতে।

সোমবার মানিককে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠিয়ে রাতভর জেরা করেন ইডির আধিকারিকেরা। মানিকের কাছ থেকে আগে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সব নথি থেকেও নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে ইডি-সিবিআই। এস‌এসসি-টেট নিয়োগ ঘোটালায় যাদের বিরুদ্ধেই পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে চলে আসছে, দেরি না করে তাদের সবাইকে হেফাজতে নিচ্ছে তদন্তে নিয়োজিত দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। মানিক ভট্টাচার্যকে আরও অনেক আগেই হেফাজতে নেওয়া ‌উচিত ছিল বলে বিরোধীদের দাবি। নিয়োগ ঘোটালায় ধৃত বাকি রাঘববোয়ালদের মুখোমুখি বসিয়ে মানিককে ইডি জেরা করতে পারে বলে অনেকের ধারণা। ইডির পর সিবিআইয়ের হেফাজতে গমন মানিকের জন্য এখন শুধুই ‌সময়ের অপেক্ষা।

Feature Image is Representational. Image courtesy-Facebook.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *