গোয়ায় ফের ছন্দপতন তৃণমূল শিবিরে, লড়াই থেকেই পিঠটান দিলেন ফেলেইরো! - nagariknewz.com

গোয়ায় ফের ছন্দপতন তৃণমূল শিবিরে, লড়াই থেকেই পিঠটান দিলেন ফেলেইরো!


তবে কি খারাপ কিছু আগাম বুঝতে পেরেছেন গোয়ার পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ ?

বিশেষ প্রতিবেদন : আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু গোয়ায় তৃণমূলের বেলুন কি ভোটের আগেই চুপসে গেল ? তা বুঝতে পেরেই কি লড়াই থেকেই সরে দাঁড়ালেন সৈকত রাজ্যের বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো ? ফেলেইরো নিজে স্বয়ং সর্বভারতীয় তৃণমূলের সহসভাপতি। তাঁকে ফাতোরদা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। শুক্রবার সকালে আচমকাই প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেন লুইজিনহো ফেলেইরো। পানাজির বাতাসে গুঞ্জন, ফাতোরদা কেন্দ্রে বিশেষ সুবিধা হবে না বুঝতে পেরেই পিছটান দিয়েছেন এই ঝানু রাজনীতিবিদ। মুখে যদিও নারীর ক্ষমতায়নের বুলি।

তৃণমূল না ছাড়লেও ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না লুইজিনহো ফেলেইরো।

শুক্রবার সকালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে ফেলেইরো জানান, “আমার পরিবর্তে ফাতোরদা কেন্দ্র থেকে দলের হয়ে লড়বেন একজন মহিলা প্রার্থী। আমাদের দলের নীতিই হল নারীর ক্ষমতায়ন। সেই কারণেই আমি সরে দাঁড়াচ্ছি।” ফেলেইরোর এই ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফাতোরদা কেন্দ্রে নতুন প্রার্থীর নাম জানায় তৃণমূল। শেইলি অভিলিয়া ভাসের নামে এই মহিলা আইনজীবী সেখানে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

গত সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। ইনাম হিসেবে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় রাজ্যসভার সাংসদ পদ। ফেলেইরোকে খুশি করতে অর্পিতা ঘোষকে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মনের দুঃখ মনেই চেপে রেখে ইস্তফা দেন অর্পিতা। পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলা থেকে রাজ্যসভায় যান গোয়ার ফেলেইরো। দিন দশেক আগে প্রকাশিত তৃণমূলের প্রথম প্রার্থী তালিকাতেই লুইজিনহো ফেলেইরোর নাম ছিল। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন – কী এমন ঘটল যে দশদিনের মাথায় লড়াই থেকেই সরে দাঁড়ালেন ফেলেইরো ?

মাত্র তিন মাস আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ফেলেইরো। এর মধ্যেই মোহভঙ্গ !

গোয়ার ঝানু এবং জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে ফেলেইরো অন্যতম। দুই দফায় স্বল্প সময়ের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। যেই ফাতোরদা কেন্দ্র থেকে ফেলেইরো সরে দাঁড়ালেন সেই কেন্দ্রে ১৯৮০ থেকে ২০১৭- মোট সাতবার জিতেছেন তিনি। তারপরেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে কেন সরলেন অভিজ্ঞ এই নেতা ? রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন, যতটা জোশের সঙ্গে তৃণমূল গোয়া অভিযান শুরু করেছিল এখন আর ততটা জোশ দেখা যাচ্ছে না। অন্য দল বিশেষ করে কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে গোয়ায় রাতারাতি একটা জোয়ার তুলেছিল বটে জোড়াফুল শিবির। কিন্তু ভোটের দিন ঘনিয়ে আসতেই ‌তাতে দ্রুত ভাঁটার টান শুরু হয়। হুজুগে পড়ে যাঁরা তৃণমূলে এসেছিলেন মোহভঙ্গ হ‌ওয়ায় ইতিমধ্যেই তাঁদের অনেকে দল ছেড়েছেন। বুধবার গোয়া তৃণমূল ত্যাগ করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদক ইয়াতিশ নায়েক। এক‌ই দিনে জোড়াফুল শিবির থেকে নাম কাটিয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার ডেনজিল ফ্র্যাঙ্কো‌। তিনি নিজে এখনও তৃণমূলেই আছি বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলেও ভেতরের খবর অন্যরকম। ফেলেইরোও তৃণমূল ছাড়ছেন- গত ২৪ ঘন্টায় এমন খবর একাধিকবার চাউর হয়েছে গোয়ার বাতাসে। সে’সব অবশ্য গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা। কিন্তু লুইজিনহো যে দলের কাজকর্মে ভীষণ হতাশ, রাজনৈতিক মহলের কাছে তা আর গোপন নেই। ফেলেইরো তৃণমূল না ছাড়লেও তাঁর প্রার্থীপদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে সেটাই কিন্তু স্পষ্ট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা- হয়তো যুদ্ধে নামার আগেই দলের এমন ছত্রভঙ্গ দশা দেখে মানে মানে সরে পড়াই শ্রেয় বলে মনে করেছেন লুইজিনহো ফেলেইরো।

Photo Credit- Twitter and Facebook.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *