৫২-তেই মহাকালের সাজঘরে ফিরলেন লেগ স্পিনের জাদুকর, থাইল্যান্ডের কোসামুইয়ে আকস্মিক মৃত্যু শেন ওয়ার্নের - nagariknewz.com

৫২-তেই মহাকালের সাজঘরে ফিরলেন লেগ স্পিনের জাদুকর, থাইল্যান্ডের কোসামুইয়ে আকস্মিক মৃত্যু শেন ওয়ার্নের


মৃত্যু মনে হয় ছায়ার মতোই জীবনকে অনুসরণ করে। ইংরেজ লেখক দানিয়েল দেফো বলেছিলেন- মৃত্যুর দরজা সবসময় খোলাই থাকে, বন্ধ করার কোনও ব্যবস্থা নেই। যেই মানুষটি অন্যের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ট্যুইট করছেন তিনি নিজেই জানেন না মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর জন্য‌ও অপেক্ষা করে আছে শীতল মৃত্যু। শুক্রবার বিকেলে থাইল্যান্ডের কোসামুইয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আকস্মিক মৃত্যু বরণ করেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট তারকা শেন ওয়ার্ন। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগেই অস্ট্রেলিয়ার আরেক প্রাক্তন ক্রিকেটার রডনি মার্শের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ট্যুইট করেছিলেন ওয়ার্ন।

শেন ওয়ার্নের শেষ ট্যুইট।

মাত্র ৫২টি বসন্ত পৃথিবীতে পার করেছিলেন শেন ওয়ার্ন। ক্রিকেটের দুনিয়ায় লেগ স্পিনের সম্রাট। অনেকের কাছে শতাব্দীর সেরা লেগ স্পিন বোলার। যাঁর স্পিন সামাল দিতে নাজেহাল হতে হয়েছে পৃথিবীর বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের। যাঁর বল পিচে পড়া মাত্রই ঘূর্ণি তুলত এবং লেগ স্ট্যাম্পে খেলতে গিয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখতেন ব্যাটসম্যানরা। হাতের জাদুতে বল ঘুরিয়ে স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে যিনি প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন তিনি নিজে মাত্র বাহান্নতেই ফিরে গেলেন মহাকালের ড্রেসিং রুমে। হৃদরোগ‌ই শেন ওয়ার্নের আকস্মিক মৃত্যুর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

লেগ স্পিনের জাদুকর। বিতর্কের বহুবার শিরোনামে।

টেস্ট ক্রিকেটে ৭০৮ উইকেট শিকারের অধিকারী ওয়ার্নের প্রথম ম্যাচ ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালে।১৪৫টি টেস্টে ৭০৮ উইকেট। সেরা ৭১ রানে ৮ উইকেট। একদিনের ক্রিকেটে ১৯৪ ম্যাচে ২৯৩ উইকেট।
বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও‌ সাবলীল ছিলেন শেন ওয়ার্ন। টেস্টে ৩১৫৪ ও একদিনের ক্রিকেটে ১০১৮ রান করেছিলেন।

ওয়ার্নের  ক্রিকেট প্রতিভা সংশয়ের ঊর্ধ্বে। যদিও মাঠের ভেতরে ও‌ বাইরে বিতর্কে জড়িয়েছেন বারংবার। ডোপিংয়ের কারণে মাঠ থেকে নির্বাসিত হয়েছেন। ২০০৪-এ পিচে প্রত্যাবর্তন ঘটলেও আগের পারফরম্যান্স আর ফিরে পান নি ওয়ার্ন। ২০০৫-এ একদিনের ক্রিকেট এবং সাতে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান লেগ স্পিনের শিল্পী।

নারী সঙ্গ থেকে মাদকাসক্তি। যৌন কেলেংকারি থেকে মারধরের অভিযোগ- বিতর্ক কখনও পিছু ছাড়ে নি ওয়ার্নের। জিহ্বার উপরেও খুব একটা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। মাঠের ভেতরে এবং বাইরে অন্য ক্রিকেটার সম্পর্কে কুকথায় বেশ পারদর্শী ছিলেন শেন ওয়ার্ন। এর জন্য খেসারত‌ও দিতে হয়েছে কয়েকবার। আর ছিল নিকোটিনের নেশা। চেইন স্মোকার বলতে যা বোঝায় শেন ছিলেন ঠিক তাই। অতিরিক্ত সিগারেট‌ই ওয়ার্নের জীবনের উপর অকালে মৃত্যুর পর্দা টেনে দিল বলে মনে করছেন অনেকে।

Photo Credit- aljazeera/ reuters/ cricket australia.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *