ডেস্ক রিপোর্ট: উপমহাদেশের বিরাট এলাকা জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। ভারতও গরমে ভুগছে কিন্তু পাকিস্তানের অবস্থা নাজেহাল বললেও কম বলা হয়। অন্য কিছুতে না পারুক, তাপমাত্রায় রেকর্ড করা পাকিস্তানের অভ্যেস আছে। ২০১৭ সালে বালুচিস্তানের তুরবাত শহরের তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল। এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ এবং সমগ্র এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ডেড আছে এটি। পৃথিবীর মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবেও যা চিহ্নিত। এবার সাত বছর আগের সেই রেকর্ড যাতে ব্রেক না হয়, তার জন্য পাকিস্তানে দোয়া-দুরুদ পড়া শুরু হয়ে গেছে।
সিন্ধ প্রদেশের মহেঞ্জোদারো শহরে গত ২৪ ঘন্টায় ৫২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর। এই মরশুমে এটাই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। দেশটির আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাগুলির কাতারে ইতিমধ্যেই নাম তুলে ফেলেছে মহেঞ্জোদারোর এই তাপমাত্রা। ৫৪ ডিগ্রি ও ৫৩.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রার পরেই পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করল মহেঞ্জোদারোর তাপমাত্রা।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2024/05/1305606_720.jpg)
তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় চিন্তিত পাকিস্তান সরকার। গরমের জ্বালায় সিন্ধ ও বালুচিস্তান প্রদেশের স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত। চাষের ক্ষেত ছেড়ে কৃষকেরা বাড়িতে। বেলা দশটা বাজার আগেই শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সরকারি দফতরগুলি পর্যন্ত কর্মীশূন্য। বড় বড় বাজারগুলি খাঁ খাঁ করছে খদ্দেরদের অভাবে। সন্ধ্যে নামার আগে দোকানের ঝাঁপ খোলার সাহস পাচ্ছেন না মালিকেরা। ঘরে থেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন লোকজন। অনেকে হিট স্ট্রোকে মারাও গেছেন। গবাদিপশু ও রাস্তার কুকুর-বেড়ালেরা নাজেহাল। কষ্ট লাঘব করতে চিড়িয়াখানার পশুদের ঘন ঘন স্নান করাচ্ছেন কর্মীরা।
সিন্ধু সভ্যতার ঐতিহাসিক শহর মহেঞ্জোদারো। তবে এখন আকারে তেমন বড় নয়। সিন্ধ প্রদেশের রাজধানী করাচি পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর। গরমে করাচির অবস্থাও বিশেষ ভাল নয়। করাচি ছাড়াও ভাওয়ালপুর, রহিম ইয়ার খান, মুলতান ও ডেরা গাজি খানের মতো বড় ও জনবহুল শহর তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর।
এই তাপপ্রবাহকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন না পাকিস্তানের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের জলবায়ু বিষয়ক সমন্বয়ক রুবিনা খুরশিদ আলম বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে পঞ্চমে পাকিস্তানের স্থান। বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশে স্বাভাবিকের অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টিপাত ও বন্যা লক্ষ্য করছি আমরা।”
Photo Credit: X handle (Twitter).