মাফিয়া শের হয়ে গেছে চুহা! যোগী রাজ্যে ভয়ে কাপড় ভিজিয়ে ফেলছে মুলায়ম জামানার গ্যাংস্টাররা - nagariknewz.com

মাফিয়া শের হয়ে গেছে চুহা! যোগী রাজ্যে ভয়ে কাপড় ভিজিয়ে ফেলছে মুলায়ম জামানার গ্যাংস্টাররা


ডেস্ক রিপোর্ট: আগে যে গুন্ডা-মাস্তানদের নাম শুনলেই সাধারণ মানুষ ঘামতে শুরু করত, এখন পুলিশের নাম শুনেই সেই গুন্ডা-মাস্তানরা প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলছে- এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের। যে ইউপি গুন্ডারাজের জন্য কুখ্যাত ছিল সেই ইউপিতে গুডা-মাফিয়ারা হয় জেলে নয় এনকাউন্টারে পরপারে। যারা দুটির একটিতেও যেতে চায় না, তারা কেউ ভাল হয়ে ঘরে বসে গেছে, কেউ বা মুলুক থেকে ভাগলবা। গুন্ডা-মাফিয়াদের ব্যাপারে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে যে কোনও নড়চড় হবে না, তা আরও একবার জানিয়ে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

৫ বছরে ১৬০ দুষ্কৃতী খতম যোগী রাজ্যে

শনিবার গোরক্ষপুরে একটি কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগী বলেন, “আগে যে মাফিয়ারা ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের ধমকি দিয়ে টাকা তুলতো। তোলা আদায়ের জন্য অপহরণ করত। না পেলে খুন করত।‌ আজ বিচারে তাদের সাজা হচ্ছে। পুলিশ ধরতে আসছে, শুনেই ভয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছে তারা।” মুলায়ম-মায়াবতী-অখিলেশের জামানায় গ্যাংস্টারদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ ছিল অতিষ্ঠ। সব থেকে বেশি যন্ত্রণা স‌ইতে হত ছোটবড় ব্যবসায়ী ও উদ্যোগীদের। মাফিয়াদের তোলা না দিয়ে ব্যবসা করার কোন‌ও সুযোগ ছিল না। উত্তরপ্রদেশে বিনিয়োগ করার আগে দশবার ভাবতেন শিল্পপতিরা। পাঁচ বছরে ইউপির অবস্থা পাল্টে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গোরক্ষপুরের অনুষ্ঠানে যোগী আরও বলেন, “যারা এতদিন মানুষকে ভয় দেখাত। জীবন কেড়ে নিত। এখন তারাই ভয়ে সরকারের কাছে জীবন ভিক্ষা চাইছে।”

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ: যোগী রাজ্যে ভয়ে কাপড় ভেজাচ্ছে একদা ত্রাস দুষ্কৃতীরা। ফটো ক্রেডিট- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

উত্তরপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে গ্যাংস্টারদের ‘ছুপা দোস্তি’ ভেঙে দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। গুন্ডা ঠ্যাঙাতে পুলিশকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ করে দেওয়া হয়েছে। যার পরিণাম- পাঁচ বছরে যোগী শাসনে ইউপিতে এনকাউন্টারে খতম হয়েছে ১৬০ কুখ্যাত দুষ্কৃতী। প্যান্ট না ভিজিয়ে উপায় আছে! তবে প্রথমেই দুষ্টু লোক ভ্যানিসের রাস্তা নিতে রাজি নন যোগী। গুন্ডা-বদমাইশদের উদ্দেশ্যে যোগীর বচন- “তোরা ভাল হয়ে যা। ভাল হতে পয়সা লাগে না।” যারা ভাল হয়ে যাচ্ছে তাদের অভয় দিচ্ছে প্রশাসন।

ডন আভি বহুত ডর মে হ্যায়

২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি এলাহাবাদ পশ্চিম কেন্দ্রের বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল ও তার দুই নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিক আহমেদ।‌ মুলায়মের আশীর্বাদ ধন্য আতিক রাজনীতি ও মাফিয়াগিরি দুটোই একসাথে চালাত। রাজু পাল ও তাঁর দুই নিরাপত্তারক্ষী হত্যাকাণ্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন আইনজীবী উমেশ পাল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগরাজের (এলাহাবাদের বর্তমান নাম) ধূমানগঞ্জ এলাকায় উমেশ পালকে খুন করা হয়। উমেশের খুনের পেছনেও আতিকের হাত খুঁজে পায় ইউপি পুলিশ। রাজু পাল হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী সরিয়ে দিতেই এই খুন বলে তদন্তে উঠে আসে। দিন কয়েক আগেই রাজু পাল হত্যা মামলায় আতিক আহমেদ সহ তিন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নিম্ন আদালত। গুজরাটের সবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশে এনে আতিকের সাজা কার্যকর করেছে যোগী প্রশাসন।

গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ: দাপট আর নেই। এখন নিজেই মৃত্যু ভয়ে কাতর মাফিয়া ডন। ফটো ক্রেডিট-জাগরণ

যোগী রাজ্যে আসতে হবে শুনেই ভয়ে সবরমতী জেলে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছিল একসময়ের ত্রাস আতিক আহমেদ। তাকে যাতে ‘এনকাউন্টারে: মেরে ফেলা না হয়, আদালতে বিচারকের কাছে আর্জি জানিয়ে রাখে আতিক। শনিবার নাম না করেই আতিক আহমেদের পরিণতির কথা যোগী আদিত্যনাথ সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলেন বলে মনে করছে মিডিয়া মহল। আতিকের মতো ‘মাফিয়া‌ শের’ যদি খাঁচাবন্দি ‘চুহায়’ পরিণত হয় তবে ষবাকি ছোটামোটাদের অবস্থা কী হতে পারে- সেটাই দুষ্কৃতীদের মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

Feature Image is Representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *