ডুয়ার্সে ভাসানের ঘাটে বিপর্যয়ের দায় সরকারের, পেপার কাটিং তুলে ধরে দাবি বিরোধী দলনেতার - nagariknewz.com

ডুয়ার্সে ভাসানের ঘাটে বিপর্যয়ের দায় সরকারের, পেপার কাটিং তুলে ধরে দাবি বিরোধী দলনেতার


ডেস্ক রিপোর্ট : বুধবার রাতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় মাল নদীতে হড়কা বানের জেরে বিপর্যয়ের ঘটনায় রাজ্য সরকারকে তুলোধুনো করেই চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনায় ডুবে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে পঁচিশ-তিরিশজনকে। প্রশাসন নিখোঁজ থাকার কথা অস্বীকার করলেও ঘটনার পর থেকেই কয়েকজনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন পরিবারের লোকেরা। এই বিপর্যয়ের দায় প্রশাসন কখনোই হাত ধুয়ে মুছে ফেলতে পারে না- এমন‌ই অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর।

ঘটনার পর থেকেই প্রশাসনের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে একাধিকবার পোস্ট করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মালবাজারের ঘটনায় প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলতে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের‌ও সাহায্য নিয়েছেন শুভেন্দু। মাল নদীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পুজোর আগে পর পর তিনটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় শিলিগুড়ি থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা দৈনিকে। সরকারকে বিঁধতে বিরোধী দলনেতার হাতিয়ার হয়েছে এই তিনটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনগুলিতে আবর্জনার স্তূপে মাল নদীর বুজে ওঠা, নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও হঠাৎ হঠাৎ করে নদীতে জলস্তর বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিসর্জনের ঘাট নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলিতে। নদীতে নেমে পিতৃতর্পণের দিন‌ও মানুষ অসুবিধায় পড়েছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বিসর্জনের ঘাট বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে জেনেও আগাম কোনও ব্যবস্থা নেয় নি মাল মহকুমা প্রশাসন ও তৃণমূল পরিচালিত মাল পুরসভা।

শুভেন্দু নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মালবাজারের বিপর্যয়ের ঘটনায় সরকারকে বিদ্ধ করে লিখেছেন-

জলপাইগুড়ির বিপর্যয়ের সম্পূর্ণ দায় প্রশাসনের ওপর বর্তায়। সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলি, মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি নয় প্রকৃত বাস্তব তুলে ধরছি। উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রতিবেদনগুলি পড়ুন। এক বার নয়, তিন বার ছাপা হয়েছে। মহকুমা শাসক ও পুরসভার চেয়ারম্যানের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে এই বিষয়ে:

২৩শে সেপ্টেম্বর মাল নদীর পাশে জমে ওঠা আবর্জনার স্তূপের কথা লেখা হয়। এমনকি পাহাড়ি মাল নদীর গতি পরিবর্তন, জলস্রোত বেড়ে যাওয়া ও হঠাৎ হড়পা বানের প্রবণতার কথা উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। মহকুমা শাসক প্রশাসনিক ভাবে পুরসভা ও পুলিশকে নিয়ে বিসর্জনঘাট পরিদর্শন করবেন বলেছিলেন। পুরসভার চেয়ারম্যানের আশ্বাসের পরেও যে আবর্জনার স্তূপের কোন বদল হয়নি এবং তার ফলে মহালয়ার তর্পণের সময় চরম সমস্যা হয় এই নিয়ে ২৫শে সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল।

মহালয়াতেই যদি এই অবস্থা হয়, তবে বিসর্জনের সময় কি হবে, পূজো উদ্যোক্তাদের এমন উদ্বেগের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।সর্বশেষে ১লা অক্টোবরের প্রতিবেদনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, শেষপর্যন্ত মাল নদীর ঘাট বিসর্জনের জন্য তৈরি হবে তো? সম্প্রতি হড়পা বানে নদী ঘাটে ট্রাক ডুবে যাওয়ার কথা লেখা হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বাবু আশ্বাস দেন যে “আমরা মাল নদীর ঘাট পুরোপুরি তৈরি করে ফেলবো”, এমনও ছাপা হয়।

সবকিছু আগে থেকে জেনেও যদি সাবধানতা অবলম্বন করা গেলো না তাহলে দোষ কি সরকার এবং প্রশাসনের নয়? তাহলে মুখ্যমন্ত্রী শীতঘুম ভেঙে মাত্র দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন কেন? উত্তর প্রদেশে অথবা কাশ্মীরে যখন মালদা/মুর্শিদাবাদের কেউ অপঘাতে মারা যান, সরকার তো ৫ লাখ টাকা করে দিয়েছেন।

রামপুরহাটের বগটুইতে নিজে ছুটে গিয়ে চেক বিলি করলেন, এখানে তেমন করলেন না কেন মাননীয়া? এঁদের দোষ কি? মা দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় মারা যাওয়ার জন্য কি এঁদের গুরুত্ব আপেক্ষিক ভাবে কম? আমার দাবি হলো প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য এই বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ অন্তত ১০ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত।

মৃতদের পরিবারের হাতে এই আর্থিক সহায়তা তাড়াতাড়ি তুলে দেওয়া হোক এবং ওনাদের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি। আহতদের অন্তত এক লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।

Feature image is representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *