জলপাইগুড়ি :পাপিয়াতেই আস্থা রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পদে বসলেন পাপিয়া পাল। তৃণমূলের দখলে আসা রাজ্যের প্রত্যেকটি পুরসভার প্রধান-উপপ্রধানদের নাম ঠিক হয়েছে কলকাতায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিলমোহর পড়ার পরেই পুরপ্রধান-উপপুরপ্রধানদের নাম খামবন্দী করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বাকি পুরসভাগুলির মতো জলপাইগুড়ি জেলার তিন পুরসভা নিয়েও জল্পনার অন্ত ছিল না। জলপাইগুড়ি, মাল ও ময়নাগুড়ি- তিন পুরসভাতেই পুরপ্রধানের পদ নিয়ে একাধিক প্রত্যাশীর মধ্যে টানাটানি চলছিল। বুধবার সকালে কলকাতা থেকে মুখ বন্ধ খাম এসে পৌঁছায় জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের দফতরে। জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ খাম খুলে নাম ঘোষণা করতেই সব জল্পনার অবসান।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন হিসেবে পাপিয়া পালের নাম ঘোষণা হতেই হর্ষোল্লাসে মেতে ওঠেন পাপিয়া অনুগামীরা। উপপুরপ্রধান পদে সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নামেই সিলমোহর বসিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২০১৫ থেকে ২০ জলপাইগুড়ি পুরসভায় উপপুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন পাপিয়া। সেই সময় পুরপ্রধান ছিলেন মোহন বোস। করোনার কারণে নির্ধারিত সময়ে ভোট না হওয়ায় বিশের জুনে রাজ্যের ১০৮ পুরসভায় প্রশাসক বোর্ড বসায় সরকার। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের প্রধানের দায়িত্ব যায় পাপিয়া পালের কাছে। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ির পুর রাজনীতিতে মোহন বোস যুগের অবসান হয়।
ফেব্রুয়ারিতে পুরভোটের দিন ঘোষণা হতেই পাপিয়া পালের নেতৃত্বে চলা প্রশাসক বোর্ড ইস্তফা দেয়। পুর প্রশাসনের দায়িত্ব নেন সদর মহকুমা শাসক। কিছুদিন প্রশাসক বোর্ডে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈকত চট্টোপাধ্যায় এবং সন্দীপ মাহাতোও। জলপাইগুড়ির নতুন পুরবোর্ডের নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, এই নিয়ে জোর টানাপোড়েন চলছিল তৃণমূলের অন্দরে। এবার পুরপ্রধান পদের বড় দাবিদার ছিলেন জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। আরও কয়েকজনের নাম নিয়েও কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসলেন পাপিয়া পালই। উপ পুরপ্রধানেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে সৈকতকে। বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ির প্রয়াস হলে নব নির্বাচিত ২৫জন কাউন্সিলর শপথ নেন। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরপ্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পাপিয়া পাল।
ময়নাগুড়ির প্রথম পুরসভার নেতৃত্ব দেবেন প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। আরএসপি থেকে তৃণমূলে আসা অনন্তদেবকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়ন দেয় নি তৃণমূল। এই নিয়ে মনে ক্ষোভ ছিল বর্ষীয়ান নেতার। পুরপ্রধান হওয়ায় সেই ক্ষোভে নিঃসন্দেহে প্রলেপ পড়ল। ময়নাগুড়ি তৃণমূলে অনন্তদেব অধিকারীর বিরুদ্ধ শিবিরও কম শক্তিশালী নয়। অনন্তদেব পুরপ্রধান হওয়ায় তাদের মধ্যে যে ক্ষোভের সঞ্চার হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ময়নাগুড়ি পুরসভার উপপুরপ্রধান পদে মনোজ রায়ের নাম অনুমোদন করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। চেয়ারম্যান পদেরই দাবিদার ছিলেন মনোজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজিমাৎ করলেন অনন্তদেব অধিকারীই। মাল পুরসভার চেয়ারম্যান পদে প্রত্যাবর্তন স্বপন সাহারই। ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন উৎপল ভাদুড়ী।
Video & Photo- Reporter.