এই তক্ষকটি বেচতে পারলে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকা রোজগার করত পাচারকারী চক্র। চিন সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ বা জীবিত বন্যপ্রাণীর ব্যাপক চাহিদা
জলপাইগুড়ি : বন্যপ্রাণীর দেহাংশ হোক কি জীবিত বন্যপ্রাণী- পাচার বন্ধ নেই। এবার পাচার হওয়ার পথে জ্যান্ত তক্ষক সহ তিনজনকে ধরল বন দফতর। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার ওদলাবাড়িতে একটি হোটেলের সামনে থেকে পাচারকারীদের গ্রেফতার করে বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জ। শনিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়।
পাচারকারীদের দলটিকে ধরতে গোপন সূত্র থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে হোটেলটির সামনে রেঞ্জার সঞ্জয় দত্তের নেতৃত্বে ওত পেতেছিল বনকর্মীদের একটি দল। অসমের নম্বর লাগানো একটি ছোটগাড়ি এগিয়ে আসতেই ঘিরে ধরেন বনকর্মীরা। গাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে তক্ষকটি উদ্ধার হয় বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। গাড়ি থেকে চালক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম- থুটান জামরা, নাদু রাম এবং নরবাহাদুর লামা। থুটানের বাড়ি অরুণাচল প্রদেশে বাকি দু’জনের অসমে। জীবিত তক্ষকটি মেঘালয়ের জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে শিলিগুড়ি হয়ে নেপালে পাচার করা হচ্ছিল বলে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছেন বন দফতরের আধিকারিকেরা। নেপাল থেকে প্রাণীটিকে চিনে পাচার করা হত বলে ধারণা করছে বন দফতর।
এই তক্ষকটি বেচতে পারলে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকা রোজগার করত পাচারকারী চক্র। চিন সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ বা জীবিত বন্যপ্রাণীর ব্যাপক চাহিদা। বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ থেকে যৌনশক্তি বর্ধক নানা রকমের ওষুধ তৈরি করার রেওয়াজ আছে সেই সব দেশে। তা ছাড়া চিনাদের এই সবের মাংসেও অরুচি নেই। তাই ভারত সহ দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণীদের মেরে দেহাংশ অথবা জীবিত বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা বাড়ছে। টাকার লোভে একটি চক্র দেশের বন্যপ্রাণের সর্বনাশ করতে কুন্ঠিত নয়।
উত্তর-পূর্ব ভারত ও তরাই-ডুয়ার্সের ঝোঁপ-ঝাড়, জঙ্গলের অনেক নিরীহ প্রাণীই আজ অবলুপ্তির পথে। এদের মধ্যে তক্ষক নামক সরীসৃপও একটি। মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের তক্ষক গেকোনিডি গোত্রের গিরগিটি প্রজাতির নিরীহ প্রাণী। পোকামাকড়, সাপ খেয়ে জীবনধারণ করে। মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। একসময় গোটা গ্রাম বাংলার ঝোঁপেঝাড়ে তক্ষকের ডাক শোনা যেত। এখন লুপ্ত হওয়ার পথে। যে কটি আছে তার উপরেও চোরা কারবারীদের নজর পড়েছে।
Photo and Video – Reporter.