বীরভূম ও ঝাড়গ্রামে রথ ছোটালেন নাড্ডা , মমতার সরকারকে তোলাবাজি-তানাশাহি-তোষণের সরকার বলে কটাক্ষ বিজেপির‌ সর্বভারতীয় সভাপতির - nagariknewz.com

বীরভূম ও ঝাড়গ্রামে রথ ছোটালেন নাড্ডা , মমতার সরকারকে তোলাবাজি-তানাশাহি-তোষণের সরকার বলে কটাক্ষ বিজেপির‌ সর্বভারতীয় সভাপতির


নাগরিক নিউস পলিটিক্যাল ডেস্ক : ভোটের দিন ঘোষণা এখনও বাকি । তার আগেই শেষ মাঘের শীতে রাজনৈতিক উত্তাপে ফুটছে বাংলা। মঙ্গলবার জোড়া পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা । রাজ্যে তৃণমূলের সরকারকে তানাশাহি , তোলাবাজি আর তোষণের সরকার বলে কটাক্ষ করেন নাড্ডা । আমফানের ত্রাণে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা তৃণমূলের লোকেরা খেয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ।

এদিন প্রথমে অনুব্রত মন্ডলের বীরভূম থেকে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেন জেপি নাড্ডা । যাত্রা শুরুর আগে তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দেন তিনি । পরে তারাপীঠের চিল্লার মাঠ থেকে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। যাত্রা শুরুর আগে দলের সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন জেপি নাড্ডা । পরে ঝাড়গ্রামের লালগড় থেকে আরও একটি পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেন জেপি নাড্ডা । দুই সভাতেই চড়া সুরে মমতার কঠোর সমালোচনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি । পরিবর্তন যাত্রার মাধ্যমে বিজেপি রাজ্যে প্রচারের ঝড় তুলতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । বীরভূমের তারাপীঠ ও ঝাড়গ্রামের লালগড় – দুই জায়গাতেই বিজেপির সভা ও রথযাত্রায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো । 

লালগড়ে বিজেপির সভায় ভাষণ দিচ্ছেন জেপি নাড্ডা

দলের সভায় ভিড়ের বহর দেখে তিনি যে যথেষ্টই উৎফুল্ল তা গোপন রাখেন নি জেপি নাড্ডা । এইবার মানুষ বাংলায় প্রকৃত পরিবর্তন আনবেই বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। ভরা সভায় দাঁড়িয়ে জেপি নাড্ডা হুঙ্কার ছাড়েন , ‘ অনেক হয়েছে মমতাদি , পরিবর্তন চাইছে বাংলা ।’ নাড্ডা বলেন,‌ পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে হবে আমাদের । যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার চালাচ্ছেন, তার পরিবর্তন জরুরী । কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার মিথ্যা অভিযোগ এনে মমতা মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন জেপি নাড্ডা। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার উন্নয়নে কাজ করতে চাইলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাগড়া দেন । জেপি নাড্ডা বলেন, ‘ মমতাজি সবসময় অভিযোগ করেন বাংলার সঙ্গে অন্যায় করছেন মোদীজি । মোদীজি নয় বাংলার সঙ্গে অন্যায় করছেন মমতাজিই । 

জেপি নাড্ডার কটাক্ষ, ‘ আমার মনে আছে ক্ষমতায় আসার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মা মাটি মানুষের কথা বলেছিলেন । কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে ? তৃণমূলের জামানায় মায়ের সম্ভ্রম রক্ষা পায় নি। মাটি রক্ষা পায় নি । আর মানুষের কথা এই সরকার চিন্তা পর্যন্ত করে না । মোদী সরকার বাংলার উন্নয়নে কী কী কাজ করেছে সভায় তা তুলে ধরেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি । সড়ক , সেতু থেকে ফ্রেট করিডোর , ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো থেকে সামাজিক সুরক্ষা – সমস্ত ব্যাপারেই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে পর্যাপ্ত সাহায্য করে চলেছে বলে দাবি করেন নাড্ডা । 

তারাপীঠে বিজেপির জনসভায় জেপি নাড্ডা

আমফানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের পাঠানো ২ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকার বেশিরভাগটাই তৃণমূলের লোকেরা খেয়ে নিয়েছে বলে সভায় কটাক্ষ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি । নাড্ডা বলেন, হাইকোর্ট এই ব্যাপারে সিএজি তদন্তের নির্দেশ দিলেও মমতা নির্দেশ রদ করার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন । দুর্নীতিগ্রস্তদের আড়াল করতেই মমতা সুপ্রিম কোর্টে দৌড়েছেন বলে বিদ্রূপ করেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে বাবা তুলে তুই-তোকারি ভাষায় আক্রমণ করে  বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করেছেন বলে এদিন কটাক্ষ করেন জেপি নাড্ডা । 

তৃণমূলের রাজত্বে দলের ১৩০জন কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন জেপি নাড্ডা । ভাষণের শুরুতেই বাংলার মনীষীদের শ্রদ্ধা জানান বিজেপি সভাপতি । বিশেষভাবে স্মরণ করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে । জেপি নাড্ডা বলেন, ‘এক দেশ , এক নিশান , এক বিধানের দাবিতে আত্মবলিদান করেছিলেন ‌শ্যামাপ্রসাদজি। শ্যামাপ্রসাদজির আত্মবলিদান বৃথা যায় নি । মোদী সরকারে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদ করে দিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নকে সার্থক করেছে । ‘ পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাম জন্মভূমির শিলান্যাসের দিন কারফিউ জারি করে আর মহররমের দিন মিছিলে সহযোগিতা করে বলে সভা থেকে অভিযোগ তোলেন জেপি নাড্ডা ।  

তারাপীঠে পরিবর্তন যাত্রায় জেপি নাড্ডা

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার করেন বর্ধমানের কালনা আর মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে । জেপি নাড্ডা প্রচার চালান বীরভূম আর ঝাড়গ্রামে । কেউই একচুল‌ও জায়গা ছাড়তে রাজি নন প্রতিপক্ষকে । ভোটের দিনক্ষণ ঘোষিত হলে যুযুধান দুই পক্ষের তরজা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে এখন এটা নিয়েই জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে ।

ভিডিও-



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *