নিয়মের ব্যতিক্রম নেই, প্রথা মেনে গুলি ছুড়েই প্রতিমা নিরঞ্জন জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে - nagariknewz.com

নিয়মের ব্যতিক্রম নেই, প্রথা মেনে গুলি ছুড়েই প্রতিমা নিরঞ্জন জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে


জলপাইগুড়ি : পাঁচশো তেরো বছরের পুজো। পুজোর সূত্রপাত হয় জন্মাষ্টমীর পর দিন কাদোখেলা থেকে। শেষ‌ দেবীর দশমী বিহিত পুজো অন্তে প্রতিমা নিরঞ্জন দিয়ে। পুজোর শুরু থেকে শেষ- আজ‌ও কোথাও নিয়ম ও আচারের কোন‌ও ব্যতিক্রম নেই। বুধবার বিজয়া দশমী। বাঙালির মন ভুবন জুড়ে বিষাদের দিন। প্রতিবারের মতো এবারও বিজয়া দশমীর বিকেলে মহা ধূমধামে বিদায় নিলেন জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মা। বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো বাংলার প্রাচীন দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র রাজবংশী সমাজের আবেগের সঙ্গে জুড়ে আছে এই পুজো। দশমীতে দেবীর নিরঞ্জন ঘিরেও একটা আলাদা অনুভুতি কাজ করে স্থানীয়দের মধ্যে।

বিসর্জনের পথে বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির দেবী প্রতিমা।

বেলা পড়ার আগেই রাজবাড়ির বিসর্জন পর্ব শেষ হয়ে যায়। রাজবাড়িতে সিঁদুর খেলতে দুপুরের আগেই ঢল নামে মহিলাদের। রাজপরিবারের সদস্যরা তো‌ বটেই আনন্দের ভাগ নিতে রাজবাড়ি চত্বরে ভিড় করেন গোটা শহরের মানুষ।‌ দুপুরে দেবী বরণ ও সিঁদুর খেলার পর্ব শেষ হলে প্রতিমা মন্ডপ থেকে বের করে আনা হয়। ঢাক-ঢোল-কাশি-বাঁশির প্রবল বাদ্য আর গগন বিদারী হর্ষোল্লাসের মধ্যে রথে আসীন দেবী প্রতিমা ধীরে ধীরে রাজবাড়ির দিঘির ঘাটে নিয়ে আসেন ভক্তরা। রাজবাড়ির মাঠ জুড়ে তখন শুধু মানুষের মাথা। সবাই আনন্দে আত্মহারা। সবার মুখেই জগজ্জননীর জয়ধ্বনি।

বন্দুক থেকে শূন্যে গুলি ছুঁড়ে নিরঞ্জন পর্বের সূচনা করেন রাজবাড়ির এক সদস্য। গুলি ছুঁড়েই শেষ হয় প্রতিমা নিরঞ্জনের অনুষ্ঠান। রাজ আমলের পরম্পরা রক্ষা করতেই আজ‌ও বিসর্জনের সময় বন্দুকের আওয়াজ করা হয়। নিরঞ্জন হ‌ওয়ার সাথে সাথেই কাঠামো তুলে ফেলাই বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির নিয়ম। এই এক‌ই কাঠামোয় আবার মাটি পড়বে জন্মাষ্টমীর পরদিন থেকে। এবারের মতো মায়ের বিদায়। আবার আগামী বছর কৈলাস থেকে নেমে বাঙালির ঘরে পা রাখবেন উমা। আবার আনন্দে মুখরিত হবে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ি।

ভিডিওতে রাজবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন-

Photo & Video- Reporter.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *