ময়নাগুড়ি : কেউ বলে বাঘাড় তো কারও কাছে বাঘা আইড়। বাংলাদেশের মানুষ আবার বাঘাইড় বলতেই অভ্যস্ত। নামেই মাছের আকৃতির পরিচয়। শনিবার শেষ রাতে ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনীতে তিস্তা নদী থেকে উঠল ৮০ কেজির বাঘাড় মাছ। জামাইষষ্ঠীর বাজারে সেই মাছ চল্লিশ হাজার টাকায় বেচলেন বাসু দাস ও ভীম দাস, যাদের জালে ধরা পড়েছিল মাছটি।
তিস্তায় মাছ ধরেই পেট চালান বাসু ও ভীম। রোজই শেষ রাতে নৌকা নিয়ে বেরোন মাছ মারতে। এদিন তিস্তা রেল সেতুর নিচে জাল ফেলতেই জাল আর টেনে তুলতে পারেন না দু’জন। বুঝতে পারেন জালে বড় মাছ ধরা পড়েছে। মাছ শুদ্ধ জালটিকে টেনে তুলতে না পেরে সেতুর পিলারে জালটিকে বেঁধে পাড়ে উঠে আসেন তারা। দিনের আলো ফুটলে মাছটিকে বাগে আনতে ফের নদীতে নামেন বাসু ও ভীম। মাছে-মানুষে দাপাদাপি চলে প্রায় দুই ঘন্টা। অবশেষে মাছটিকে ডাঙায় তুলতে সক্ষম হন তাঁরা। ডাঙায় মৎসাবতারটিকে তুললে দেখা যায় তার আকৃতি-প্রকৃতি এক কথায় দশাশই। বাঁশে বেঁধে মাছটিকে ময়নাগুড়ির পাইকারি বাজারে আনতে জিভ বেরিয়ে যায় দু’জনের। বাজারে এনে ওজন করলে দেখা যায় মাছটির ওজন ৮০ কেজি।
আড়তে ৫০০ টাকা কেজি দর ওঠে বাঘাড়টির। বাঘাড় মাছ তিস্তার জলে পাওয়া যায়। গড় ওজন ২৫-৩০ কেজির মধ্যে হলেও মাঝেমধ্যে ৮০-১০০ কেজি ওজনের বাঘাড়ও মেলে। এই মাছের সর্বোচ্চ ওজন ১১০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এর ইংরেজি নাম গ্যাঞ্জেটিক গুঞ্চ ( Gangetic Goonch )।
দক্ষিণ এশিয়ায় গঙ্গার পাশাপাশি ও সিন্ধু নদেও পাওয়া যায় বাঘাড় মাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম জানারিয়াস ইয়ারিলি। মাছটিকে জায়েন্ট ডেভিল ক্যাটফিসও বলা হয়ে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লাওস ও ইন্দোনেশিয়ার নদীতেও বাঘাড় মাছ দেখা যায়। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাঘাড় মাছের চাহিদা রয়েছে। তবে মাছটি বিলুপ্ত হতে চলায় ইতিমধ্যেই আইইউসিএন ( International Union for Conservation of Nature )-এর লাল তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
Photo- Reporter.