ডেস্ক রিপোর্ট: আবার প্রমাণিত হল ভারতীয় গণতন্ত্র কতটা আনপ্রেডিক্টেবল। কোনও বুথ ফেরত সমীক্ষা দিয়েই জনতা জনার্দনের মনের তল খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়ে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল ইন্ডিয়া জোটের। এনডিএ-র ৪০০ পার তো দূরের কথা, সব মিলিয়ে আসন সংখ্যা ৩০০ পর্যন্ত ঠেকবে বলে মনে হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৫৪৩ আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে তিনটি, এগিয়ে আরও ৫৩৮টিতে। জাতীয় কংগ্রেস ৯৮টিতে এগিয়ে। জিতে গেছে একটি। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টির নজরকাড়া ফল উত্তরপ্রদেশে। ৩৬টি আসনে এগিয়ে অখিলেশ যাদবের দল। আর এক্সিট পোলের সব হিসেব উল্টে দিয়ে বাংলায় মমতার জয়জয়কার।
এই মুহূর্তে ৩০ টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি ১১টিতে এবং কংগ্রেস একটিতে এগিয়ে। ডায়মন্ডহারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রেকর্ড মার্জিনে জিততে চলেছেন। বসিরহাটেও তৃণমূলের হাজি নুরুল ইসলামের কাছে রেকর্ড ভোটে পিছিয়ে বিজেপির রেখা পাত্র। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। কলকাতার দুই আসন, যাদবপুর সহ দুই চব্বিশ পরগনার সবকটি আসনেই তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। উনিশের জেতা আসনও ধরে রাখতে ব্যর্থ বিজেপি। খোদ রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বালুরঘাট কেন্দ্রে পিছিয়ে। কোচবিহারের মতো শক্ত ঘাঁটিতেও পিছিয়ে নিশীথ প্রামাণিক। তমলুকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এগিয়ে থাকলেও কাঁথিতে সৌমেন্দু অধিকারী পিছিয়ে পড়েছেন।
বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তৃতীয়। সেখানে ইউসুফ পাঠান বড় ব্যবধানে এগিয়ে। বামেরা শূন্য। মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম হারছেন। মুসলিম ও মহিলা সহ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বড় অংশের ভোট যে ঝাঁকিয়ে ঘাসফুলে পড়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বড় বিপদে পড়তে চলেছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা হয়েছিল। বুথফেরত সমীক্ষাতেও সেই ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু জনগণ যে এখনও মমতার সঙ্গেই আছে, রেজাল্ট তা প্রমাণ করে দিল। তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক। রাজ্য বিজেপির সেনাপতির দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর উপরেই ন্যস্ত করেছিলেন মোদী-শাহ। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরে বাংলার ফলের যা ট্রেন্ড, তাতে বলাই যায়, তৃণমূলের ভেতরে তো বটেই বাংলার রাজনীতিতেও অভিষেকের গুরুত্ব আরও বাড়ল। শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য ৪ জুন একটা বড় ধাক্কা।