হকার উচ্ছেদের বিরোধিতায় বিজেপি, 'সরকার না থামলে বুলডোজারের সামনে গিয়ে দাঁড়াব', শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি

হকার উচ্ছেদের বিরোধিতায় বিজেপি, ‘সরকার না থামলে বুলডোজারের সামনে গিয়ে দাঁড়াব’, শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি


সোমবার নবান্নে রাজ্যের পুরসভা ও পুরনিগমগুলির প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে নিজের দলের পুরপ্রধান, মেয়র এবং মন্ত্রীদের কার্যত তুলোধুনো করেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা-বিধাননগর থেকে শিলিগুড়ি, শহরাঞ্চলের সরকারি জমি দখলদারদের কবলে চলে গেছে বলে বৈঠকে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি জমি জবরদখল হয়ে যাওয়ার পেছনে নিজের দলের নেতাদের‌ই হাত আছে বলে মনে করেন তিনি। সরাসরি নাম উল্লেখ করে দলের মন্ত্রী, মেয়র ও পুরপ্রধানদের ভর্ৎসনা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকানির পর ২৪ ঘন্টা পেরোয় নি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতা-সল্টলেক থেকে আসানসোল, শিলিগুড়ি, সব জায়গায় জবরদখল উচ্ছেদে নেমে পড়ে পুর প্রশাসন। বুধবার‌ও দিনভর কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলে। বিকেলে আসরে নামেন শুভেন্দু।

মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দফতরে সাংবাদিকদের সামনে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: এন‌এনডিসি

সাংবাদিকদের শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরাও বেআইনিভাবে সরকারি জমি দখলের বিরোধী। কিন্তু জমি পুনরুদ্ধারের কাজটা রাজ্যের সর্বত্র নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সারতে হবে। উচ্ছেদ শুরু করার আগে সরকার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এস‌ওপি) তৈরি করুক।” শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে অভিযান শুরু করেছে, আমরা প্রথমে তা মহৎ মনে করেছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম, সরকারি জমি আদৌ উদ্ধার হচ্ছে না। কেবল বিশেষ কয়েকটি এলাকায় সাধারণ গরীব মানুষের ক্ষতি করা হচ্ছে। সবটাই হচ্ছে ক্যামেরার সামনে। কাজের চেয়ে প্রচারের তাগিদ বেশি।”

শুভেন্দু অভিযোগ করেন, “বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তদের সামান্য রোজগারের উপরে ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবরোধ নামিয়ে আনা হয়েছে।” বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরাও পুর এলাকায় পরিচ্ছন্নতার পক্ষে। কিন্তু দার্জিলিং থেকে দিঘা, কলকাতা থেকে কাকদ্বীপ- সর্বত্র এই কাজ হচ্ছে কি? না, কেবল বিধাননগর, হাতিবাগান সহ উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিশেষ কিছু এলাকায় এই অভিযান চলছে?” শুভেন্দুর প্রশ্ন, জেলা থেকে যে গরীব মানুষেরা প্রতিদিন কলকাতায় এসে সামান্য হকারি করে পেট চালান, এটা কি শুধুই তাঁদের জন্য?”

নিজে গিয়ে বুলডোজারের সামনে দাঁড়াব

রাজ্য সরকারের কাছে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “প্রথমে একটি এস‌ওপি তৈরি করুন। সরকারি জমি চিহ্নিত করুন। তারপর মানুষকে নোটিশ দিয়ে জমি ছাড়তে বলুন।” হকার উচ্ছেদের বিরোধিতা করে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা আর একদিন দেখব। শুক্রবার‌ও অন্যায়ভাবে এই অত্যাচার চললে আমরা হকারদের পাশে থাকব। প্রয়োজনে আমি নিজে বুলডোজারের সামনে গিয়ে দাঁড়াব।” শুভেন্দু বলেন, “লালবাজারের পুলিশ যেভাবে গরীব মানুষের জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তা অন্যায়। এটা মানবতাবিরোধী কাজ।” পুরসভাগুলিতে হারের জ্বালা ভুলতেই এইভাবে হকার উচ্ছেদ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। হকার উচ্ছেদে বাধা দিতে জনগণের কাছে আবেদন জানান শুভেন্দু অধিকারী। দলের কর্মীদের‌ও অনুরোধ করেন, হকারদের পাশে দাঁড়াতে।

সরকারি জমি ছেড়ে দেওয়ার পর যাঁদের রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে, তাঁদের সাহায্য করতে সরকারকে বলেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, তিনি অনেককে চাকরি দিয়েছেন। এ’বার কয়েক লক্ষ হকারকেও চাকরি দিন।”

Feature graphic is representational and designed by NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *