ইস্তফা দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! তিনি রাজনীতির পথে, স্পষ্ট‌‌ই জানালেন অভিজিৎ

ইস্তফা দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! তিনি রাজনীতির পথে, স্পষ্ট‌‌ই জানালেন অভিজিৎ


অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাইকোর্টে সোমবার‌ই বিচারপতি হিসেবে তাঁর শেষদিন। সে’দিন কোন‌ও বিচারকার্য করবেন না তিনি। শুধু হাতে থাকা মামলাগুলি ছেড়ে দেবেন। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মৌখিকভাবে পদত্যাগের কথা জানানোর পরপরই দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেবেন বিচারপতি গাঙ্গুলি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যে মুহূর্তে আমি চিঠিটা পোস্ট করব, সেই মুহূর্ত থেকে আমার রেজিগনেশন কার্যকর হবে।”

পদত্যাগ করার পর মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় হাইকোর্টের সামনে মাস্টারদা সূর্য সেনের মূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মাস্টারদা সূর্য সেনের মূর্তির নিচে আমি আসব। আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর সেদিন আমি দেবো।” তবে নিউজ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজনীতিতে আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়ায় রাজ্যে ইতিমধ্যেই হ‌ইচ‌ই পড়ে গেছে। জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় চ্যানেলটিকে বলেন, “রাজনীতির ময়দানেই আমি যাব। কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে শুরু করব, সেটা আজই বলছি না। কাল আমার যে সামান্য কাজটুকু আদালতে রয়েছে, সেটুকু করে চলে যেতে চাই, যাতে কেউ বলতে না পারেন যে আমার কোনও সিদ্ধান্ত একপেশে হয়েছে।” সা়ক্ষাৎকারে তৃণমূলের সাম্রাজ্যকে চৌর্য সাম্রাজ্য বলে কটাক্ষ করেন অভিজিতবাবু। তিনি বলেন, “এতদিন ইতিহাসে মৌর্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি। এখন চোখের সামনে চৌর্য সাম্রাজ্য দেখছি।”

ভিডিও: সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য।

তৃণমূলের জন্য‌ই তিনি রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এই যে বৃহত্তর ক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে আমাকে, এর জন্য আমাদের ক্ষমতাসীন দলকে অভিনন্দন জানাব। আমি যখনই কোনও ন্যায় বিচার করতে গিয়েছি, যেখানে ন্যায্যতা থাকবে, সেটা যখনই তাদের পছন্দ হয়নি, তাদের বিভিন্ন মুখপাত্র বিচারপতির উদ্দেশে, আদালতের উদ্দেশে অত্যন্ত অপমানজনক মন্তব্য করেছেন, ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন। বারে বারেই ওই দলের তরফে বলা হয়েছে, সামনে মাঠে আসুন, এসে লড়াই করুন। আমি ভেবে দেখলাম, তাঁরা যখন ডেকেইছেন এত করে, এত ধরনের ব্যঙ্গ এবং অপমানজনক কথা বলেছেন, তাহলে তাঁদের ইচ্ছেটাই পূর্ণ হওয়া উচিত। তাই একপ্রকার তাঁদের এই অপমানজনক কথাবার্তা এবং পাশাপাশি যে আহ্বান, মাঠে এসে বলুন, সেই জন্যই পদ ছেড়ে চলে আসার সিদ্ধান্ত।”

রাজনৈতিক দলে না গেল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলে না গেলে আমার মনে হয়েছে যে ,আদালতের ক্ষেত্রের বাইরে যে বহু সাধারণ মানুষ আছেন, তাঁদের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। ভোটে দাঁড়ানো, না দাঁড়ানো, এই বিষয়ে কোনও কথা আজ বলব না। কোনও রাজনৈতিক দলে যদি যাই, এখনও ভোট ঘোষণা হয়নি। যদি যোগ দিই কোনও দলে, তারা সিদ্ধান্ত নেবে।”

আগামী ৬ মার্চ বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা। তার দু’দিন আগেই পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার দুপুরে অভিজিতবাবু বোমা ফাটানোর আগেই সাত তারিখ বড় যোগদান বলে রহস্য তৈরি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার বিকেল থেকেই কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার গুঞ্জন, তবে কি মোদীর সভাতেই পদ্মের উত্তরীয় গলায় ধারণ করবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তমলুক থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছে তাঁর সাক্ষাৎকার সম্প্রচারকারী নিউজ চ্যানেলটি।

Feature graphic is representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *