সকালে মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ, রাতের মধ্যেই এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী বনে যাবেন নীতিশ

সকালে মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ, রাতের মধ্যেই এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী বনে যাবেন নীতিশ


নীতিশ কুমার মহাগঠবন্ধন বা ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছেড়ে বেরিয়ে ফের বিজেপির ছত্রছায়ায় আশ্রয় নেওয়ায় তাঁকে বেঈমান-বিশ্বাসঘাতক বলছে কংগ্রেস, আরজেডি এমনকি তৃণমূল‌ও। যদিও নীতিশ জোটকে কলা দেখিয়ে এনডিএ-তে ফিরতে চলেছেন, টের পেয়েই তাঁকে ধরে রাখতে চেষ্টা কিছু কম করে নি কংগ্রেস। মন গলাতে নীতিশকে বার কয়েক ফোন‌ করেছিলেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। কিন্তু খড়্গের ফোন পর্যন্ত তুলেন নি নীতিশ। আসলে নীতিশ বরাবরই এক কথার মানুষ। পার্টনারের উপর থেকে মন উঠে যাওয়া মাত্রই তিনি তার সঙ্গে রাজনৈতিক সহবাসে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

মহাগঠবন্ধনকে টাটা জানিয়ে আবার এনডিএতে চলে এসেছেন নীতিশ কুমার। ছবি- সংগৃহীত

২৪৩ সদস্যের বিহার বিধানসভায় নীতিশের দলের বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ৪৫। একক বৃহত্তম দল লালু-তেজস্বীর আরজেডি, তাদের বিধায়ক ৭৯। ৭৮ বিধায়ক নিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। ২০১৫ থেকে জোট পাল্টাপাল্টি করেই মুখ্যমন্ত্রীর চাকরি দিব্যি টিকিয়ে রেখেছেন নীতিশ। ২০২০-এর বিধানসভা নির্বাচনে নীতিশের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিদায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলের মনে কোনও সংশয় ছিল না। শেষ বেলায় হাল ধরেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। মোদী ম্যাজিকের জোরে সে যাত্রা বিহারে এনডিএ পরাজয় এড়ালেও জেডি (ইউ) তিন নম্বরে নেমে যায়। তারপরেও জোট অটুট রাখতে নীতিশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় বিজেপি। এনডিএ ‍ক্ষমতায় ফিরলে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী রাখতে হবে, ভোটের আগেই অমিত শাহের সঙ্গে কড়ার করে নিতে ভোলেন নি নীতিশ।

শক্ত ঘাঁটি হলেও এখনও পর্যন্ত নিজের শক্তিতে বিহারে সরকার গঠন করতে পারে নি বিজেপি। বিহারে নীতিশ কুমারের জনপ্রিয়তা তলানিতে। জোটসঙ্গী হিসেবেও যে নীতিশ মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নন, নীতিশের বায়োডেটাই তার প্রমাণ। কিন্তু তারপরেও চঞ্চলমতি নীতিশকে দলে টেনে লোকসভা ভোটের মুখে বিরোধী জোটকে ভেঙে ফেলা যাচ্ছে; মোদী-শাহের জন্য এই প্রবল শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে এর চেয়ে মন ভাল করা ঘটনা আর কী হতে পারে!

নীতিশ কুমার নিঃসন্দেহে বিরাট মাপের নেতা।‌ বিহারের মতো রাজ্যে ১৮ বছর মুখ্যমন্ত্রী থেকেও নিজে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত। লালুপ্রসাদ যাদবের আমলের অরাজকতা থেকে বিহারকে মুক্ত করার কৃতিত্ব থেকে নীতিশকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না কিন্তু এখন তিনি নিতান্তই একজন রাজনৈতিক পরগাছায় পরিণত হয়েছেন। লোকসভা নির্বাচন মিটলে এবং দিল্লিতে ভালোয় ভালোয় ক্ষমতায় ফিরলে বিজেপির কাছে নীতিশের প্রয়োজন ফুরোবে। বিহারে পদ্মরাজ বিজেপির বহু দিনের স্বপ্ন। স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নীতিশ কুমারকে ‘স্টপগ্যাপ চিফ মিনিস্টার’ হিসেবে মেনে নিতে মোদী-শাহের অসুবিধা নেই।

Feature image credit- X handle of Chief Minister Nitish Kumar.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *