পঞ্চায়েত ভোট: ফলপ্রকাশের পরেও ১০ দিন পর্যন্ত রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ হাইকোর্টের - nagariknewz.com

পঞ্চায়েত ভোট: ফলপ্রকাশের পরেও ১০ দিন পর্যন্ত রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ হাইকোর্টের


কলকাতা: শুধু রাজ্যপাল‌ই নয়, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে উদ্বেগ দূর হচ্ছে না হাইকোর্টের‌ও। মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিন থেকেই হানাহানি শুরু। প্রচারের শেষ দিনেও বন্ধ নেই।‌ রাজ্যে ২৮ দিনে রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন ১৭ জন মানুষ। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ, পঞ্চায়েত ভোটের ফলপ্রকাশের পরেও ১০ দিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে হবে বাংলায়।

একদফায় পঞ্চায়েত ভোট নেওয়া হবে ৮ জুলাই। গণনার দিন ধার্য হয়েছে ১১ জুলাই। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয় ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে। গণনা শেষ হতে হতে ১২ জুলাই বিকেল গড়িয়ে যাবে। আদালতের নির্দেশ রাখতে জেলায় জেলায় ২২ জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখতে হবে প্রশাসনকে।

পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার দিন থেকেই ভোট ঘিরে গুচ্ছের মামলা। প্রথম থেকেই বিরোধীদের সবথেকে বড় উদ্বেগ, এক দফার ভোটে হিংসা, সন্ত্রাস ও ছাপ্পা। মনোনয়ন পর্বে হিংসা আটকাতে ব্যর্থ রাজ্যের পুলিশ।‌ সব বুথে সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করার মতো জনবলও রাজ্য পুলিশের ছিল না। সব দিক খতিয়ে দেখে বিরোধীদের দাবিকেই মান্যতা দেয় হাইকোর্ট। পঞ্চায়েত ভোটে ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটের থেকে বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে যায়। কিন্তু দেশের শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশকেই বহাল রাখলে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে আবেদন জানায় নির্বাচন কমিশন।

বুথে ৫০:৫০ ফর্মুলায় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ

বিরোধীদের দাবি, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে পাওয়া যাবে ৬৫ হাজার ৭৬০ জন জ‌ওয়ান। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ভোটকেন্দ্রে চারজনের কম জ‌ওয়ান মোতায়েন করা যায় না। পঞ্চায়েত ভোটে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৩,২৮৩। সমস্যার সমাধানে আদালতের কাছে ভোট কয়েক দফায় ভাগ করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু দফা বৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্রতি বুথে ৫০:৫০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বুথ থেকে স্ট্রংরুম- সর্বত্র‌ই ব্যালট বাক্সের যথাযথ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেও কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

সম্পূর্ণ বাহিনী এসে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ

প্রথমে ২২ কোম্পানির পর পরে আর‌ও ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাকি ৪৮৫ কোম্পানি নিয়ে টালবাহানা চলে। অবশেষে গত ৪ জুলাই ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী বাংলায় পাঠানোর কথা আদালতকে জানান কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী। বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে জট কাটলেও মোতায়েন নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না বিরোধীরা। শনিবার ভোট। বৃহস্পতিবার‌ও রাজ্যে সম্পূর্ণ বাহিনী এসে পৌঁছায় নি। ভোট গ্রহণের দিন রাজ্যের সব বুথেই দু’জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জ‌ওয়ান থাকবেন, এমন আশ্বাস বৃহস্পতিবার আদালতকে দিতে পারেন নি কেন্দ্রের আইনজীবী। এই পরিস্থিতিতে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সময়সীমা শেষ হল এ’দিন বিকেলে।

Feature image is representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *