আফগানিস্তানে খাদ্যাভাব চরমে, খিদের জ্বালায় সন্তান বেচতে চাইছেন মা! - nagariknewz.com

আফগানিস্তানে খাদ্যাভাব চরমে, খিদের জ্বালায় সন্তান বেচতে চাইছেন মা!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালিবান রাজত্বে আফগানিস্তানে মানুষের জঠরে খিদের আগুন জ্বলছে। ক্ষুধার জ্বালায় পেটের সন্তান‌ও বিক্রি করে দিচ্ছেন মায়েরা। আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের বালখ প্রদেশ থেকে সন্তান বিক্রির চেষ্টার একটি খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর নুরুল হাদি আবু ইদ্রিস। দুই বছরের যে শিশু কন্যাটিকে বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা, সেই পরিবারের ঘরে এক দানা খাদ্যশস্য‌ও নেই বলে জানা গেছে।

শিশুটির মায়ের নাম নাসরিন। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমাদের ঘরে খাবার নেই। ঘরে আলো জ্বালানোর মতো জ্বালানিও নেই। এই শীত কীভাবে পার করব আমরা জানি না। এই পরিস্থিতিতে দুই বছরের বাচ্চাটিকে বাঁচানো সম্ভব নয়। বরং তাকে বেচে হাতে কিছু অর্থ আসলে, ঠান্ডা মোকাবিলায় জ্বালানি জোগাড় করতে পারব আমরা।” তাদের পরিবার এক বছর ধরে সরকার কিম্বা কোন‌ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে কোন‌ও ধরণের খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে না।” বিষয়টি জানাজানি হ‌ওয়ার পর অবশ্য রেডক্রসের মাধ্যমে পরিবারটির হাতে খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি তুলে দেন স্থানীয় প্রশাসনের লোকেরা।

একুশের আগস্টে বিশ বছর পর ফের কাবুল দখল করে তালিবান। তালিবানরা ক্ষমতায় আসার আগেও আফগানিস্তানে খাদ্য সংকট ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রেমের কারণে খাদ্যাভাব নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভারত‌ও আফগানিস্তানকে প্রচুর খাদ্যশস্য সরবরাহ করত। তালিবানরা কাবুলে সরকার গঠন করার পর আন্তর্জাতিক‌ দাতব্য সংস্থাগুলির কর্মীরা আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর থেকেই দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে খাদ্যাভাব চরম আকার ধারণ করে।

আফগানিস্তানের ৩৮ শতাংশ মানুষের দু’বেলা খাবার জোটে রাষ্ট্রসংঘের কার্যক্রমের কারণে।

আন্তর্জাতিক সহায়তা না পেলে নাগরিকদের অনাহারে মৃত্যু অনিবার্য, এটা বুঝতে পেরে সম্বিত ফেরে তালিবান সরকারের। পরে রাষ্ট্রসংঘের হাতে-পায়ে ধরে আফগানিস্তানে ফের আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করায় তারা। এই মুহূর্তে দেশটির ৩৮ শতাংশ মানুষের দৈনিক আহার রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের খাদ্য কর্মসূচির ওপর নির্ভরশীল। নাগরিকদের ক্ষুধা, দারিদ্র ও বেকারত্ব রোধে মৌলবাদী তালিবান সরকারের কোনও সুনির্দিষ্ট নীতি নেই। সরকারের অপদার্থতা আফগানিস্তানকে স্থায়ী দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আধিকারিকেরা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *