আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডায় খুন ভারতীয় পড়ুয়া। কানাডার অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী টরন্টোর শেরবোর্নে সেন্ট জেমস পাতাল স্টেশনে ঢোকার মুখে কার্তিক বাসুদেব নামে বছর একুশের ওই ভারতীয় ছাত্রকে পরপর গুলি করে হত্যা করা হয় বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
কার্তিক বাসুদেব কানাডার সেনেকা কলেজে গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বাসিন্দা কার্তিক চলতি বছরের জানুয়ারিতে কানডায় পা রাখেন। টরন্টোর একটি আবাসনে পরিবারেরই এক সদস্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ঘর ভাড়া থাকতেন তিনি। পড়াশোনার ফাঁকে একটি রেস্তোরাঁয় কাজও করতেন কার্তিক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কর্মস্থলে যোগ দিতে সেন্ট জেমসের সাবওয়ে স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন ভারতীয় ছাত্রটি। স্টেশনের ঠিক প্রবেশপথে তাঁর উপর হামলা করে আততায়ী। খুব কাছ থেকে একাধিক গুলি চালানো হয় কার্তিকের বুক লক্ষ্য করে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কার্তিকের বাবা জিতেশ বাসুদেব সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাজে বেরোনোর কিছুক্ষণ আগেই ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। এদিকে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কার্তিক রেস্তোরাঁয় না আসায় কর্তৃপক্ষ তাঁকে বারবার ফোন করতে থাকে। মোবাইল বন্ধ থাকায় রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ কার্তিকের জ্যাঠতুতো বোনকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। বাসা থেকে রওনা দেওয়ার তিন ঘন্টা পরেও ভাইয়ের মোবাইল বন্ধ থাকায় পুলিশে যোগাযোগ করার কথা ভাবেন কার্তিক বাসুদেবের বোন। সেই সময় নিউজ চ্যানেলের ফ্ল্যাশে সেন্ট জেমস টাউনের পাতাল স্টেশনে শুটআউটের খবর দেখতে পেয়ে ভাইয়ের পরিণতি আঁচ করতে পারেন তিনি।
ঘটনার পরপরই কানাডার ভারতীয় দূতাবাস টরন্টো পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ট্যুইটে ঘটনাটিকে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক বলে বর্ণনা করেছে ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ও মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ এস জয়শংকরও। যত দ্রুত সম্ভব কার্তিক বাসুদেবের দেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে কানাডার ভারতীয় দূতাবাস আশ্বাস দিয়েছে।
অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য কানাডা সরকারকে বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টরন্টো পুলিশের হোমিসাইড শাখা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় ছাত্রের ঘাতকদের ধরতে ঘটনার সময় সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকেও খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। শুটআউটের পর পরই ঘটনাস্থল গ্লেন রোড থেকে হাওয়ার্ড স্ট্রিটের দিকে হ্যান্ডগান হাতে একজনকে যেতে দেখা গেছে বলে টরন্টোর পুলিশ জানিয়েছে।
Photo source- Twitter.