জলপাইগুড়ি : করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার প্রশ্নে জলপাইগুড়িতে কি প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ? পুর প্রশাসনের মধ্যেও কি দ্বন্দ্ব ? মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে লকডাউন নিয়ে দুই রকমের ঘোষণা তেমনই জল্পনা উস্কে দিচ্ছে নাগরিকদের মনে। সোমবার পুরভবনে বৈঠক শেষে জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, সংক্রমণে লাগাম টানতে চলতি মাসের ১৯,২২,৩০ ও ৩১ তারিখ শহরের সমস্ত দোকান-বাজার-মল-শোরুম বন্ধ থাকবে। টোটোও চলাচল করবে না। পুর কর্তৃপক্ষের ডাকা বৈঠকে সদর মহকুমা শাসক সুদীপ পালও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সোমবার বিকেলে বৈঠক শেষে চারদিনের লকডাউনের ঘোষণার পরপরই কানাঘুষো শুনতে পাওয়া যায় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভেতরেই মতভেদ আছে। রাতেই চাপের মুখে চারদিনের কমপ্লিট লকডাউনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে পুরসভা। চাপটা প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকেই এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে। ফের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্তও রাতেই নিয়ে ফেলা হয়। মঙ্গলবার পুরসভায় আরও এক প্রস্থ বৈঠকে ঠিক হয় এক সঙ্গে শহরের সমস্ত দোকানবাজার বন্ধ না করে এক-একদিন এক-একটি এলাকা ধরে বাজার বন্ধ রাখা হবে।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ জানুয়ারি দিনবাজার , মার্চেন্ট রোড, ইন্দিরা কলোনি, বিডিও অফিস এলাকা, রায়কত পাড়া , হাসপাতাল পাড়া এবং বেগুনটারির সমস্ত দোকান-বাজার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ২১ জানুয়ারি স্টেশন বাজার, বাবু পাড়া, পোস্ট অফিস মোড়, তেলি পাড়া ও দুই নম্বর ঘুমটির দোকানবাজার বন্ধ থাকবে। ২২ জানুয়ারি পান্ডাপাড়া, বউবাজার থেকে তিন নম্বর ঘুমটি এলাকায় দোকান-বাজার বন্ধ রাখতে হবে। ২৪ জানুয়ারি বয়েলখানা বাজার, উকিল পাড়া ও শান্তি পাড়ায় যাবতীয় ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ থাকবে। ২৭ জানুয়ারি মাসকালাইবাড়ি থেকে শিরিশ তলা পর্যন্ত দোকানবাজার বন্ধ থাকবে। ২৯ জানুয়ারি বিবেকানন্দ পাড়া, টিকিয়া পাড়া, পুলিশ লাইন এবং গান্ধী মোড় সংলগ্ন এলাকায় দোকান-বাজার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি বন্ধ থাকবে ৩ নম্বর ঘুমটি থেকে কদমতলা, কদমতলা মোড়ের চারদিকের চার রাস্তা বরাবর সমস্ত দোকান-বাজার উকিল পাড়া এবং থানা মোড় এলাকার দোকান-বাজার ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ মাহাতো সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা জেলা শাসককে অবহিত করা হয়েছে। জেলা শাসকের অনুমতি পেলেই বুধবার শহরে মাইকিং করা হবে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের দুই ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় ও সন্দীপ পাল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমা শাসক সুদীপ পাল। বাড়িতে করোনা রোগী থাকায় পুরসভায় আসছেন না চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল। উপর মহলের চাপে সিদ্ধান্ত বদলের কথা মুখে যদিও স্বীকার করেন নি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। নাগরিকদের অসুবিধার কথা ভেবেই পুরসভা টোটাল লকডাউন থেকে সরে এসেছে বলে জানান তিনি।
Video – Reporter. Feature image is symbolic.