সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা রোধে বাংলাদেশ সরকার কি ব্যর্থ ? - nagariknewz.com

সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা রোধে বাংলাদেশ সরকার কি ব্যর্থ ?


ফেক ফেসবুক আইডি খুলে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ । এর পর রংপুরের পীরগঞ্জে জ্বালানো হল সংখ্যালঘুদের গ্রাম । কুমিল্লার ঘটনার চারদিন পরেও কেন সংখ্যালঘুদের রক্ষায় অপ্রস্তুত বাংলাদেশ প্রশাসন ?

বাংলাদেশ ডেস্ক : সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা বন্ধে বাংলাদেশ প্রশাসনের ব্যর্থতা আবার‌ও স্পষ্ট হল । রবিবার রাত দশটা নাগাদ রংপুর জেলার ‌পীরগঞ্জে হামলা চালিয়ে রাজবংশীহিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দিল সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের একটি উন্মত্ত অংশ । ঘটনায় ২৪০টি বাড়ি ভস্মীভূত । আচমকা গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘরে আগুন দিতে থাকে দুষ্কৃতীরা। নিরীহ গ্রামবাসীদের মারধর করা হয় । ঘরের মহিলারাও রেহাই পায় নি । ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে ‌পালিয়ে যায় সবাই । ফিরে এসে আক্রান্তরা দেখেন সব শেষ । মাথার উপর আশ্রয় হারিয়ে সর্বস্বান্ত রাজবংশী সম্প্রদায়ের ২০০টি পরিবার ।

রংপুর পীরগঞ্জ : সংখ্যালঘুর হাহাকার ।

সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করার পদ্ধতি এক‌ই । ফেসবুকে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে , এই অভিযোগে গ্রামটিতে হামলা চালানো হয় । ফেসবুক আইডিটি যে ফেক , এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই ‌স্থানীয় পুলিশের । বাংলাদেশের ভেতর ‌বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলতে‌ শুরু করেছে , কুমিল্লা , নোয়াখালি , চাঁদপুরের ঘটনার পর যেখানে দেশ জুড়ে পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে , সেখানে ভুয়ো ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শোরগোল ওঠার সাথে সাথেই কেন রংপুর প্রশাসন পীরগঞ্জের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করল না ?

পীরগঞ্জের ঘটনায় পুলিশ ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে সোমবার জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান । বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ” সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে একটি মহল । কয়েকজন ব্যক্তির ষড়যন্ত্র প্রত্যেকটি ঘটনার পেছনে কাজ করছে ।‌ আর কিছু মানুষ না বুঝে এদের প্ররোচনায় পা দিয়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ শানাচ্ছে । ” বাংলাদেশের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে, ” এই ষড়যন্ত্রকারীদের শনাক্ত করতে প্রশাসন ব্যর্থ হচ্ছে কেন ? ১৩ ই অক্টোবর মহাষ্টমী পুজোর দিন কুমিল্লায় যে অশান্তির সূত্রপাত তা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে অনেকটা সময় পেয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু নোয়াখালি , চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর এমনকি রাজধানী ঢাকায় পর্যন্ত পরের দিন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ল । অথচ কুমিল্লার ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাংলাদেশের বাইশটি জেলায়‌ বিজিবি মোতায়েন করে দেয় সরকার । “

রংপুর পীরগঞ্জ : সর্বস্বান্ত সংখ্যালঘু পরিবারের এক কর্তা।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ বলছে, ৭০টির বেশি পুজো মন্ডপ ধ্বংস হয়েছে হিংসার জেরে । ইসকন , রামকৃষ্ণ মিশন ও রামঠাকুরের আশ্রম সহ বহু মঠমন্দির আক্রান্ত । আক্রমণকারীদের হাত থেকে মন্দির বাঁচাতে গিয়ে ইসকনের চারজন সন্ন্যাসী খুন হয়েছেন বলে জানা গেছে । দশ বছরের একটি শিশুকন্যা ধর্ষিতা ও খুন হয়েছে বলে খবর । সহিংসতায় মোট ছয়জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হয়েছে বলে ঐক্য পরিষদের পক্ষে জানানো হয়েছে ।

Pictures : Collected from sources.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *