অরুণ কুমার : কেন্দ্রীয় সরকারের বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার আন্দোলন তিনশো দিনে পা দিতে চলেছে। আর সেই সঙ্গে বাড়ছে দেশ জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বিশেষ করে উত্তর ভারতের রাজ্য রাজ্যগুলিতে। মুজাফফর নগরে আয়োজিত হয়ে যাওয়া কৃষকদের মহা পঞ্চায়েত সম্মেলনের পর আগামী দিনে সারাদেশে কেন্দ্রে ও বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ আন্দোলন জোরালোভাবে আরম্ভ করেছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা । উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরে সম্প্রতি কিষান মোর্চার সম্মেলন দেশের মধ্যেই নয় দেশের বাইরেও এক নতুন বার্তা বহন করেছে। কৃষক শ্রমিক বিরোধী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী দিনে তা বড় ধরনের বিক্ষোভ আন্দোলনে রূপান্তরিত হতে চলেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। জানা গিয়েছে, কৃষকদের এই আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য যে সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের ভূমিকা অসাংবিধানিক ছিল তাদের বিরুদ্ধেও সংগঠিত হচ্ছে এই কৃষকদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ আন্দোলন।
মুজাফফরনগরে কিষান মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হওয়ার পরপরই হরিয়ানার কারনালে পরবর্তী কিষাণ পঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয় বির্তকিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবির পাশাপাশি যে সমস্ত আধিকারিক কৃষকদের বিরুদ্ধে আইনের অপপ্রয়োগ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা অন্যতম দাবিতে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রশাসনের সাথে কৃষক সংগঠনের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার ফলে কারনাল বিক্ষোভ সমাবেশ তীব্র আকার ধারণ করে এবং সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কৃষক নেতাদের প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় ও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আগে আইন-শৃংখলার অবনতির আশঙ্কায় আন্দোলন বিক্ষোভ চলাকালীন হরিয়ানার 4 টি জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি 144 ধারা জারী করেছিল প্রশাসন।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2021/09/IMG-20210908-WA0009.jpg)
হরিয়ানার কারনাল আয়োজিত পঞ্চায়েতের পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রশাসনের সাথে কথা বলার অনুমতি কেবল 11 জনকে অনুমতি দেওয়া হয় কিন্তু প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার মার্চ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি । সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতাদের বক্তব্য যে সমস্ত সরকারি আধিকারিক অন্যায় করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি সরকারকে পূরণ করতে হবে কিন্তু তা প্রশাসন মানতে অস্বীকার করায় আগামী দিনে আরো আন্দোলন তীব্র হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তারপর সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার পক্ষে যোগেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, আমরা কোনভাবেই এই আন্দোলনের সংকল্প থেকে পিছনে ফিরে তাকাবো না সরকারী আধিকারিক অসাংবিধানিকভাবে কাজ করেছেন তাদেরকে প্রশাসন হত্যার অপরাধ অভিযোগ থেকে কোনভাবেই বাঁচতে পারবে না। শ্রী যাদব জানিয়েছেন, আমরা এই আন্দোলন আরও শক্তিশালী করব এবং সরকারের এহেন মানসিকতার আচরণের তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি আগামী দিনে কৃষকরা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার কে উচিত শিক্ষা দেবে বলে সংযুক্ত কিষান মোর্চার জারি করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
হরিয়ানার কারনালে মহাপঞ্চায়েত সম্মেলনের পর তারা মার্চ করে রাজ্য সচিবালয়ের দিকে এগোতে থাকে কৃষক নেতাদের প্রশাসন প্রথমে আটক করে তারপরে নিজেদের হেফাজতে নেয়। এদের মধ্যে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা বলবীর সিং রাজবালা ডাক্তার দর্শন পাল গুরুনাম সিং ধোনি ,যোগেন্দ্র যাদব এবং রাকেশ টিকেইট ছিলেন ।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2021/09/IMG-20210908-WA0005.jpg)
ইতিমধ্যেই মোজাফফরনগর মহাপঞ্চায়েত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আগামী দিনে ভারতীয় জনতা পার্টি কেন্দ্রীয় শাসন ক্ষমতায় ও উত্তর প্রদেশের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে যেখানে ভারতীয় জনতা পার্টি ও তার সহযোগী দল ক্ষমতায় রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাবে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। আগামী 28 শে সেপ্টেম্বর ছত্রিশগড়ে কৃষকদের পরবর্তী মহা পঞ্চায়েত সম্মেলন আয়োজিত হতে চলেছে।
রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার এই মহা পঞ্চায়েত সম্মেলন বিজেপির অন্দরমহল বিশ্বাসের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকজন সাংসদ ও বিধায়ক কৃষকদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। সংসদ বরুণ গান্ধীর সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক সাংসদ কৃষকদের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীর ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক রাম একবাল সিং ,এদের অন্যতম যারা আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে এই মুজাফফরনগরের আয়োজিত কিষাণ মহা পঞ্চায়েত সম্মেলনে কৃষক নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন ও উত্তরপ্রদেশ উত্তরাখণ্ডের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে খোলাখুলিভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে। এই বিক্ষোভ ও খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ বিজেপির অন্দরমহলে আত্মবিশ্বাসের ভিতকে অনেকটাই নাড়িয়ে দিয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। এই অবস্থায় যদি চলতে থাকে তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে যথেষ্ট বেগের মুখোমুখি হতে হবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর এর রেশ পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে সেটাই মনে করা হচ্ছে কারণ এই মহা পঞ্চায়েত থেকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের উত্তরাখণ্ড মুজাফফরনগর সমস্ত ক্ষেত্রে ইস্যুগুলোকে একসূত্রে গেঁথে সেগুলো কে সামনে আনা হয়েছে। এই আন্দোলনকেও জারি রাখা হবে যতদিন না কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি তাদের সংসদে পাস করার তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার, ন্যূনতম সমর্থন মূল্য আইন প্রণয়ন ছাড়াও যে সমস্ত আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা অভিযুক্ত করা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার না করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত – একথা সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেত্রী বৃন্দ ঘোষণা করেছেন। হলে পরিস্থিতি আপাতত কোন ভাবেই শান্ত হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে ।কোনমতেই কৃষকরা পিছিয়ে আসবেন তাদের এই দাবিগুলি থেকে।
এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ করতে হয় যে গত 28 শে আগস্ট হরিয়ানায় কারনালে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ এর ফলে বেশ কয়েকজন কৃষক আহত হন এবং একজন কৃষক মারা যান একজন কৃষকের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় 300 জন কৃষকের বিরুদ্ধে হরিয়ানা পুলিশ দেশদ্রোহীতার মামলা রুজু করে। যা এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ দিনের-পর-দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠতে আরম্ভ করেছে।
এই সময়ে এখানে আরো একটি উল্লেখ করার বিষয় হল এই যে একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওর মাধ্যমে এটা দেখা যাচ্ছে যে কারনালের একজন সাব ডিভিশন ম্যাজিস্ট্রেট তার প্রশাসনিক অধিকারীদের এই নির্দেশ দিচ্ছেন যে আন্দোলনকারী কৃষকদের মাথা ফাটিয়ে দিতে হবে যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে। এই সমস্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আন্দোলনরত কৃষকরা কিছুতেই পিছু হাঁটবেন না এই আল্টিমেটাম সরকারকে দাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি দিনকে দিন জটিল আকার ধারণ করতে চলেছে।
আন্দোলনকারী কৃষকদের দাবি উক্ত দোষী আধিকারিক ম্যাজিস্ট্রেট সিনহার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা লিপিবদ্ধ করে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক সেইসঙ্গে নিহত কাজলের পরিবারকে 25 লক্ষ টাকা এবং রাজ্যের হিংসায় আহত হওয়া কৃষকদের 2-2 লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। এই দাবির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল 6 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এই দাবি পূরণ না হওয়ার ফলে পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে আগামী দিনে । উপরন্তু কার্নাল সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট আয়ূষ সিনহার বিরুদ্ধে কোনো রকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতেও অস্বীকার করেছে হরিয়ানা প্রশাসন। অর্থাৎ বকলমে পরোক্ষে আয়ুষের আচরণকে সমর্থন করেছে হরিয়ানার মনোহর সিং খাট্টার সরকার। এই অবস্থায় আন্দোলনকারী কৃষকরা আগামী দিনে কৃষক আন্দোলনকে আরও জোরদার করবে বলে ঘোষণা করেছে মোজাফফরনগর ও কার্নালে আয়োজিত কৃষকের মহা পঞ্চায়েত সম্মেলনে।
ইতিমধ্যে কার্নাল এ পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে তার জন্য 144 ধারা ঘোষণা করার পাশাপাশি অতিমারী আইনে 188 ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এবং উক্ত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সংযুক্ত কিষান মোর্চার জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এটাও জানানো হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কিষাণ পঞ্চায়েত মহাসম্মেলনের আয়োজন কৃষক নেতাদেরকে প্রশ্ন করেছেন গত দু’বছরে সারা দেশে কটা কৃষি মান্ডি বাজার বন্ধ হয়েছে? এর উত্তরে কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, বিতর্কিত এই কৃষি আইন আনার পর সারাদেশে বিভিন্ন কৃষি মান্ডি রয়েছে সেখানে রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে বিভিন্ন কৃষি বিপণন বোর্ডের রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে 66% ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2021/09/IMG-20210908-WA0007-1024x767.jpg)
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার জারি করা প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে দাবি করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশে বিভিন্ন কিষাণ মান্ডি গুলিকে রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় মন্ত্রী রামচন্দ্র চৌহান বিধানসভায় জানিয়েছেন নতুন কৃষি আইন পাস হওয়ার পর বিভিন্ন কৃষি মান্ডিগুলিতে রাজস্ব সংগ্রহের ব্যাপক ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এপিএমসি বা কৃষি মান্ডিগুলি তৈরি করার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছিল সেটা আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার দ্বারা উদ্বোধন করা কিষান স্টোর গুলির মাধ্যমে কৃষি সার-বীজ প্রভৃতির কালোবাজারি করা হচ্ছে। এই কারো বাজারি খোলাখুলি ভাবে করা হচ্ছে যা এক ধরনের ফৌজদারি অপরাধ বলে এই প্রেস বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে মোজাফফরনগর কিষান মহা পঞ্চায়েতের পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ বিধায়ক এবং জেলা সভাপতি কে অফিস ও বাড়ির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ইতিমধ্যেই আরম্ভ হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিক্ষোভ কর্মসূচি একই উত্তর প্রদেশ উত্তরাখান্ড পাঞ্জাব হরিয়ানা সহ মধ্যপ্রদেশ ও অন্যান্য জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে বলে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি ও তার সহযোগী দলগুলোকে কালোপতাকা দেখানো বিভিন্ন জায়গায় তাদের পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ স্লোগান দেওয়া সহ কৃষি আইন বাতিলের দাবি প্রতিবাদ সংঘটিত করা অব্যাহত রয়েছে।
![](https://nagariknewz.com/wp-content/uploads/2021/09/IMG-20210908-WA0004.jpg)
সংযুক্ত কিষান মোর্চার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে কিষাণ মহা পঞ্চায়েত সম্মেলনের পরবর্তী সময়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাথে ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ জেলা এবং প্রতি স্তরে যে ধরনের দুর্ব্যবহার করে চলেছেন তার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে মোর্চার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। এই ধরনের আচরণ এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় কিষান মোর্চা ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের আচরণ অমানবিক মিডিয়া বিরোধী এবং কৃষক মহিলা যুব বিরোধী বলে উল্লেখ করেছে তাদের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে।
ভারতীয় জনতা পার্টির আইটি সেলে যেভাবে কৃষক মহা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কর্মসূচি কে মিথ্যা এবং সাজানো ভাবি পরিবেশন করছে তার তীব্র নিন্দা করেছে ভারতীয় কিষান মোর্চা। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন সরকার যতই দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক না কেন তারা আন্দোলন থেকে কোনোভাবেই পিছিয়ে আসবেন না, আন্দোলনকারীদের মন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা হোক না কেন তারা কোনভাবেই বিগত দশ মাস ধরে চলে আসা এই আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসবেন না বরং এই আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করবে বলে তারা ঘোষণা করেছেন।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে আরো জানানো হয়েছে, পাঞ্জাবে আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে সেগুলি প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে। দাবি না মানা হলে আন্দোলন তীব্র হবে। আগামী 27শে সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধ সফল করার জন্য প্রস্তুতি ইতিমধ্যে আরম্ভ করে দিয়েছেন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতারা। বিভিন্ন রাজ্যে কিষান মহা পঞ্চায়েত আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী 11 ই সেপ্টেম্বর বিহারের পাটনায় আয়োজিত হবে কিষান মহা পঞ্চায়েত। মিশন উত্তর প্রদেশ এই কর্মসূচিতে লখনৌতে হবে 9ই সেপ্টেম্বর কিষাণ পঞ্চায়েত আয়োজনের বৈঠক। জানা গিয়েছে, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার মুজাফফরনগর ও পরে কারনালে মহাপঞ্চায়েত পরবর্তীকালে আগামী দিনে যেখানে যেখানে এই কিষাণ মহাপঞ্চায়েত সম্মেলন আয়োজিত হবে সেই সমস্ত জায়গায় 144 ধারা প্রশাসনের তরফ থেকে জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই অবস্থায় কৃষকরা যে থেমে থাকবে না তাদের কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে যার ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল থেকে জটিলতর ধারণ করতে পারে বলে সহজেই অনুমান করা যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন কতটা সক্রিয় হবে এবং এর ফলে আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকেই ধাবিত হবে সেটা সহজেই বলে দেওয়া যায়।