নাগরিক ওয়েব ডেস্ক : কোভিড পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মেনে সোমবার সন্ধ্যার আগেই শেষ অষ্টম দফার প্রচার । সোমবার একদিকে যখন সপ্তম দফার ৩৬ আসনে ভোট নেওয়া চলল আরেকদিকে তখন শেষ দফায় ৩৫ আসনে শেষ মুহুর্তের প্রচার চালালেন প্রার্থীরা , অবশ্যই সীমিত আকারে অথবা ভার্চুয়াল মোডে । এদিন দিল্লি থেকেই অনলাইনে পরপর মালদহ , বীরভূমের লাভপুর এবং কলকাতার জোড়াসাঁকো আসনে দলের প্রার্থীদের হয়ে ভার্চুয়াল র্যালিতে ভাষণ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে পরাজয় মেনে নিয়েছেন বলে প্রতিটি সভা থেকেই কটাক্ষ করেন নাড্ডা । পরাজয় নিশ্চিত জেনে তৃণমূল সুপ্রিমো ঘাবড়ে গিয়ে ভুলভাল বলছেন বলে মনে করেন তিনি ।
ভাষণের বড় অংশ জুড়ে কোভিড নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতার তোলা অভিযোগ খন্ডন করেন জেপি নাড্ডা । টিকাকরণ নিয়ে মমতার অভিযোগ মিথ্যা বলে বলে দাবি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি । বিভিন্ন সভা ও সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করছেন,’ কেন্দ্রীয় সরকার কোভিডের টিকা না পাঠানোয় টিকার অভাবে বাংলায় টিকাকরণ ব্যহত হচ্ছে । মঙ্গলবার ভার্চুয়াল র্যালি থেকে মমতার এই অভিযোগ খন্ডন করে নাড্ডা বলেন, ‘ মমতা মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন । ভ্যাকসিনেশনের পরিসংখ্যান দেখলেই মমতার মিথ্যা ধরা পড়ে যাবে । ‘ ভ্যাকসিন না থাকলে রাজ্যে কীভাবে প্রতিদিন ভ্যাকসিনেশনের সংখ্যা বাড়ছে ? সভা থেকে প্রশ্ন তোলেন জেপি নাড্ডা ।
কোভিড পরিস্থিতিতেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি ছাড়তে পারেন নি বলে অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। মমতাকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে নাড্ডা বলেন, ‘ বিগত বছর আপনাকে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হলে আপনি তাদের গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। আপনি তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন নি। আজকে আপনি কোন মুখে বলছেন করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার আপনাকে সাথ দিচ্ছে না ? ‘ কোভিড নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী যখনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুঁতো দেখিয়ে তাতে গরহাজির থাকেন বলেও অভিযোগ করেন নাড্ডা । জেপি নাড্ডা বলেন, ‘ গত ১৭ মার্চ ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচী নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত জানতে বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপনি সেই বৈঠকে থাকেন নি মমতাজি । আপনার অহঙ্কার সবসময় কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্কের মধ্যে দেওয়াল তুলে দাঁড়িয়ে থাকে। আর এর মাশুল গুনতে হয় বাংলার মানুষকে । ‘
সোমবার রাজ্যে তিনটি ভার্চুয়াল র্যালিতে ভাষণ দেন জেপি নাড্ডা । |
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দক্ষ নেতৃত্বে দেশ কোভিড জনিত সঙ্কট দ্রুতই কাটিয়ে উঠবে বলে তিনটি সভা থেকেই আশা প্রকাশ করেন জগৎপ্রকাশ নাড্ডা । কোভিড পরিস্থিতির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ৮০ কোটি দেশবাসীকে খাদ্যশস্য জোগান দিতে প্রধানমন্ত্রী ২৬ হাজার কোটি টাকার গরীবকল্যাণ তহবিল গঠন করেছেন বলে জানান জেপি নাড্ডা। গত বছর লকডাউন পিরিয়ডে রাজ্যের গরীব মানুষদের ফ্রিতে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো চাল-গম তৃণমূল নেতাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি । আগামী মে-জুন মাসে গরীব কল্যাণ তহবিলের টাকায় রেশন দেওয়ার সময় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সরকার চলে আসবে জেনে আশ্বস্ত নাড্ডা ।
কোভিড রোগীদের জন্য অক্সিজেনের সঙ্কটও দ্রুতই মিটে যাবে বলে মানুষকে আশ্বাস দেন জেপি নাড্ডা। নাড্ডা বলেন, ‘ অক্সিজেন আমদানিতে সমস্ত রকমের শুল্ক তুলে নিয়েছে সরকার। করোনার ওষুধপত্র ও ওষুধ তৈরীর কাঁচামালের ওপর থেকেও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে । দেশের বায়ুসেনা সিঙ্গাপুর থেকে অক্সিজেন এয়ার লিফ্ট করার কাজ করছে । ২৩টি মোবাইল অক্সিজেন জেনারেটিং মেশিন জরুরী ভিত্তিতে জার্মানি থেকে রপ্তানি করা হচ্ছে । ‘ জেপি নাড্ডা বলেন, ‘ পিএম কেয়ার ফান্ডের টাকায় কলকাতায় যে করোনা টেস্টিং ল্যাব তৈরি করা হয়েছে তাতে দৈনিক তিন হাজার স্যাম্পল পরীক্ষা করার পরিকাঠামো রয়েছে । ‘
ছবি- বিজেপির অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত। ভিডিও লিঙ্ক- পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি ইউটিউব ।