তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ' ভাইজান 'কেই চাই - nagariknewz.com

তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ‘ ভাইজান ‘কেই চাই


এন এন ডি সি পলিটিক্যাল ডেস্ক : ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোটের দিনক্ষণ জানিয়ে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন এমন সম্ভাবনা‌ই প্রবল । যদিও বাংলা জুড়ে ভোটের বাজনা বেজে গিয়েছে বলাই যায় । বিজেপি ও তৃণমূল রীতিমতো প্রচারে নেমে গেছে । প্রায় প্রতি সপ্তাহেই  বাংলা সফরে আসছেন মোদী ও  শাহ । যাকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি বলে কটাক্ষ করার সুযোগ ছাড়ছে না তৃণমূল । বিজেপি আর তৃণমূলে তরজা লেগেই রয়েছে ।  এদিকে বামেরা নাকাল রাজ্য রাজনীতির সদ্যজাত শিশু আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ )  কলিজায় একটু মহাব্বতের জমিন পেতে । 

গত একবছর ধরেই বাজারে খবর  ফের জোট করে ভোট লড়বে বাম ও কংগ্রেস । মোটের ওপর হোঁচট না খেয়ে আসন সমঝোতাও ঠিকঠাক‌ই এগোচ্ছিল দুই শিবিরে । দিনকয়েক আগেই আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন জোটে আসন সমঝোতা একপ্রকার পাকাই । তাহলে কার ভাগে কত আসন সেই সংখ্যাটা  জানিয়ে কথাটা ঘোষণা করতে বিলম্ব কেন ? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে গুমোড়  ভাঙলেন স্বয়ং বিমানবাবু । পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির পীরিতির অপেক্ষাতেই নাকি জোটের আসনরফা প্রায় চূড়ান্ত হয়েও  ঝুলে আছে । বলা ভালো ঝুলিয়ে রেখেছে সিপিএম । পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিকে তাঁর মুরিদরা ‘ ভাইজান ‘ বলে ডাকে । ভাইজানকে জোটে না আনা পর্যন্ত আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজাফফর আহমেদ ভবনের কর্তামশাইদের শান্তি হবে না বলেই মনে হচ্ছে । সিপিএমের অবস্থা এখন ‘ তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ভাইজানকে চাই ‘ গোছের‌ বেপরোয়া হয়ে গেছে । রাজনৈতিক সূত্র বলছে গতিক এমন দাঁড়িয়েছে যে ভাইজানের দিলে জায়গা পেতে কংগ্রেসকে পর্যন্ত তালাক দিতে প্রস্তুত সিপিএম !

আব্বাস সিদ্দিকি না কংগ্রেস -সিপিএমের এখন শ্যাম রাখি না কূল রাখি দশা







এদিকে রকমসকম দেখে নিজের ভাও সমানে বাড়িয়েই চলেছেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি । আইএস‌এফকে ঠিক কত আসন ছাড়তে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রস্তুত তা জানা যায় নি । তবে জোটের কাছে আব্বাস সিদ্দিকির দাবি কমপক্ষে ৫০টি আসন ।  আব্বাসের দাবি করা ১৭টি আসন নিয়েই ঝামেলা বেঁধেছে বলে ভেতরের খবর ।‌ এই ১৭ আসন নিয়ে বামেদের তেমন মাথাব্যথা নেই । না থাকার‌ই কথা । কারণ আসন গুলি রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত তিন জেলা মুর্শিদাবাদ , মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের  । এই তিন জেলাই কংগ্রেসের ‌শক্ত ঘাঁটি । মুর্শিদাবাদ নিয়ে অধীর চৌধুরীর স্পর্শকাতরতা সবার জানানিজেদের এই তিন ঘাঁটি থেকে গুনে গুনে সতেরোটি আসন আব্বাস সিদ্দিকির হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব নয় প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে । চরম দুর্দিনেও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই তিন জেলা কংগ্রেসকে কখনও খালি হাতে ফেরায় নি । আবার সদ্যগঠিত ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের‌ও নজর সংখ্যালঘু প্রধান এই তিন জেলা থেকে কিছু আসন বের করে আনা । ফলে সতেরোটি আসন নিয়ে কংগ্রেস ও আইএসএফ কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয় এক চুলও । যতদূর জানা গেছে নিজের পেশ করা আসন তালিকা ছোট করতে মোটেই গরজ দেখাচ্ছেন না আব্বাস সিদ্দিকি ভাইজান । বুঝিয়ে সুঝিয়ে আইএস‌এফের চেয়ারম্যান ‌নৌশাদ সিদ্দিকির দিল‌ নরম করতে ইতোমধ্যে‌ই বার দুয়েক বৈঠক সেরে ফেলেছেন বাম-কংগ্রেস‌ নেতৃত্ব । কিন্তু সদ্য রাজনীতিতে আসা সিদ্দিকি ভ্রাতাদের‌ মন নরম করতে জোটের নেতারা ব্যর্থ হয়েছেন বলেই খবর । উল্টে আসন সমঝোতা নিয়ে বোঝাপড়ায় আসার আল্টিমেটাম দিয়ে দিয়েছেন আইএসএফ নেতৃত্ব । শুক্রবারের মধ্যে প্রত্যাশা মতো আসন ভাগে না পেলে জোট জলাঞ্জলি দিয়ে তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই ঠিক করে নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নৌশাদ সিদ্দিকি । 

এখন পীরের দোয়াই বামেদের ভরসা

এখন ভাইজান বাম-কংগ্রেসের মোহাব্বতের ধার না ধারলেও বামেরা তো ভাইজানের প্রেমে পাগল । তাই আব্বাস সিদ্দিকি মেজাজ চড়াতেই ফাঁপরে পড়েছে সিপিএম । আলিমুদ্দিনের এখন শ্যাম রাখি না কূল রাখি দশা আব্বাস সিদ্দিকির মন রাখলে কংগ্রেস থাকে না । কংগ্রেসের মন রাখলে পীরজাদাকে বশে রাখা যায় না । এই পরিস্থিতিতে বামেরা আইএস‌এফকে ছেড়ে কংগ্রেসকে নিয়ে ঘর করবে নাকি কংগ্রেসকে তালাক দিয়ে নতুন প্রণয়িনী  আইএস‌এফকেই ঘরে তুলবে অথবা শেষ পর্যন্ত দু’জনকে‌ই ঘরে রাখবে এখন সেটাই দেখার । তেমন হলে কংগ্রেসকে ছেড়ে ভাইজানকেই বুকে টেনে নিতে পারে সিপিএম, খবর এমন‌ও । ভোট বড়‌ বালাই ব্রাদার । এখন বামেদের কাছে কংগ্রেসের থেকেও বড় সেক্যুলার ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির  ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট‌ । ভোটের বাজারে‌ পীরের দোয়াই সিপিএমের ভরসা  । বাংলায় বামপন্থা ঊনপঞ্চাশ থেকে সাতে নামার কী মাহাত্ম্য ! 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *