দিদির দূতরা মানুষের ঘরে গিয়ে দুপুরে কী খাবেন, তাও জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। মেনু- ডিম ভাত।
কলকাতা: সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এদিকে নিয়োগ, আবাস ও একশ দিনের কাজ সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার শাসকদল। যদিও গা থেকে দুর্নীতির দুর্গন্ধ ঘষে তুলতে হম্বতম্বির শেষ নেই পিসি-ভাইপোর। বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা ও একশ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বেশি চিন্তিত মমতা-অভিষেক। অস্বচ্ছতার অভিযোগে এই দুই প্রকল্পেই টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফাঁপরে পরে শুদ্ধিকরণে নেমেছে তৃণমূল। শুদ্ধিকরণ বা ধোলাইয়ের ঠেলায় পঞ্চায়েত প্রশাসনে তৃণমূলের অনেক পদাধিকারীর পদ গিয়েছে। পঞ্চায়েত পার করতে এবার বাড়ি বাড়ি ‘দিদির দূত’ পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে ছিল তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠক। বৈঠকে ‘দিদির রক্ষাকবচ’ কর্মসূচির রূপরেখা ঠিক করে দিয়েছেন মমতা। মানুষকে দিদির রক্ষাকবচ পরাতে ঘরে ঘরে যেতে হবে দিদির দূতদের। ঘরে ঘরে গিয়ে দিদির দূতদের যা করতে হবে, তা বিজেপির থেকে টোকা বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। জনসংযোগ বাড়াতে সাধারণ মানুষের ঘরে গিয়ে দলের নেতাদের মধ্যাহ্নভোজন সারতে হবে- বহু আগেই এই নির্দেশ দিয়েছিলেন অমিত শাহ। উনিশে লোকসভা এবং একুশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় এসে খোদ অমিত শাহ নিজে একাধিকবার এমন ভোজন সেরেছেন সাধারণ গৃহস্থের ঘরে। আগামী দু’মাস মমতার দূতদেরও এই কাজ করতে হবে। মমতা অবশ্য মধ্যাহ্ন ভোজনের পাশাপাশি রাত্রিবাসেরও নির্দেশ দিয়েছেন ‘দিদির দূতদের’ প্রতি।
মানুষের বাসায় তাঁর দূতদের পাতে কী পরবে, তাও নজরুল মঞ্চের সভায় জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। মেনু যেন ডিম্ভাতের উপরে না যায়, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে খাল-বিলের ছোট মাছ হলে দিদির অসুবিধা নেই। মমতা বলেন, “মধ্যাহ্নভোজ মানেই এলাহি আয়োজন নয়। ডাল, ভাত, তরকারি, বড় জোর একটু ডিমের ঝোল ভাত। গ্রামে খাল-বিলে অনেক রকম ছোট মাছ পাওয়া যায়। তা দিয়েই খাওয়া-দাওয়া সারতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে বাড়ি পেয়েছেন বা পেতে পারেন, এমন সাড়ে পাঁচ লক্ষ উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। টাকা পর্যন্ত ফেরত দিতে বলা হচ্ছে এদের। অস্বচ্ছতার অভিযোগে একশ দিনের জব কার্ডও হারাতে চলেছেন বহু মানুষ। উপভোক্তার তালিকা স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত না করলে কেন্দ্রের অনুদান মিলবে না। আবার অনুদান বন্ধ থাকলে কিম্বা গণহারে উপভোক্তার তালিকা থেকে নাম বাদ গেলে গ্রামে গ্রামে জনরোষের মুখে পড়তে হতে পারে শাসকদলের নেতাদের। এই পরিস্থিতিতে শ্যাম ও কূল- দুই-ই কীভাবে রক্ষা পায়- সেই কৌশল ভাঁজতেই ব্যস্ত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ‘দিদির রক্ষাকবচ’ এই কৌশলেরই অংশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Photo Credit – Official Facebook page of TMC.