ইলেকশন ডেস্ক: মোদীর রাজ্যে নতুন রেকর্ড গড়ার পথে বিজেপি। ১৯৯৮ সাল থেকেই গুজরাটে বিজেপির সরকার। কিন্তু বাইশে অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়ে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলেছে পদ্ম শিবিরের বিজয়রথ। বিজেপির ইতিহাসে তো বটেই এমনকি গুজরাটের ইতিহাসেও এমন ভূমিধ্বস বিজয়ের নজির আর কোনও দল রাখতে পারে নি। ১৮২ সদস্যের বিধানসভায় এর আগে সব থেকে বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করার রেকর্ডটি ছিল কংগ্রেসের। ১৯৮৫-র নির্বাচনে ১৪৯টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল কংগ্রেস। এবার এখনও পর্যন্ত ১৫৭টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে মাত্র ১৭টি আসনে। আমি আদমি পার্টি ৫টি আসনে। ৩টিতে অন্যান্যরা। এই ট্রেন্ড শেষ পর্যন্ত বজায় থাকলে, বলাই যায় যে, সাফল্যের নতুন পালক উঠতে চলেছে গুজরাট বিজেপির মুকুটে।
এক্সিট পোলে গুজরাটে বিজেপির ভারি বিজয়ের ইঙ্গিত ছিলই। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ইভিএম খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্কার হয়ে যায়, এক্সিট পোলের হিসেবের থেকেও অনেক বড় বিজয় মোদীর রাজ্যে ছিনিয়ে নিতে চলেছে পদ্ম শিবির। মোদীর রাজত্বেও কখনও এতটা চমৎকার সাফল্য পায় নি বিজেপি। ২০১৭-র নির্বাচনে ৯৯টি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বিজেপিকে। কংগ্রেস পেয়েছিল ৭৭টি। এবার এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস মাত্র ১৭টিতে এগিয়ে। কয়েকটি আসনে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। চূড়ান্ত ফল কী হবে বলা মুশকিল। কিন্তু সব মিলিয়ে হাত শিবির ২০টির বেশি আসন পাওয়ার মতো অবস্থায় নেই। গুজরাট কংগ্রেসের ইতিহাসে সবথেকে খারাপ ফল, কোনও সন্দেহ নেই।
পাঁচ বছর আগে আম আদমি পার্টি গুজরাট ভোটে লড়লেও দাগ কাটতে পারে নি। এবার এখনও পর্যন্ত পাঁচটি আসনে এগিয়ে আপ। আপ কংগ্রেসের ভোট কেটে বিজেপির সুবিধা করে দেবে বলে ভোটের আগে থেকেই বলছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এক্সিট পোলেও সেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট, আপ কংগ্রেসের ভোটে বড় মাপে ভাগ বসানোর পরেও বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ৫১ শতাংশ ক্রস করে গেছে। এখনও পর্যন্ত বিজেপির ভোট ৫২.৯ শতাংশ। ২০১৭ সালে বিজেপির ভোট ছিল ৪৯.১ শতাংশ। প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়াকে মোকাবিলা করে ৩.৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়েছে পদ্ম শিবির। ২০১৭-য় কংগ্রেসের ভোট ছিল ৪১.৪ শতাংশ। এবার এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের ভোট ২৭.০৩ শতাংশ। হাত শিবির ভোট খুইয়েছে ১৪.৩৭ শতাংশ। এই বিপুল ভোট যে আপের ঘরে পাস হয়েছে ভোটের পরিসংখ্যানে তা স্পষ্ট। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত আপের ঘরে ভোট পড়েছে ১২.৯৪ শতাংশ। কংগ্রেসের খোয়া যাওয়া ভোট আর আপের প্রাপ্ত ভোট প্রায় সমান। যদিও কংগ্রেস আর আপের ভোট যোগ করার পরেও তা বিজেপির ধারেকাছে আসছে না। কাজেই আপ ভোটের ময়দানে না থাকলে নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের খানিকটা সুবিধা হত কিন্তু কংগ্রেস বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারত- এ’কথা বলার সুযোগ নেই।