ডেস্ক রিপোর্ট : সোমবার থেকে স্কুল খুলে দিল কর্নাটক সরকার। প্রথম থেকে দশম- সমস্ত শ্রেণিতেই অফলাইন পড়ালেখা শুরু হয়ে গেল কর্নাটকের সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি স্কুলে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নগেশ। শুধু কিন্ডারগার্টেন লেভেল খুলতে আরও কয়েকদিন সময় নিচ্ছে কর্নাটক প্রশাসন।
দীর্ঘদিন পর ক্লাসরুমে আসতে পেরে খুশি পড়ুয়ারা। ছাত্র-ছাত্রীদের আবার সামনাসামনি পড়ানোর সুযোগ পেয়ে আনন্দিত শিক্ষক- শিক্ষিকারাও। বেঙ্গালুরু শহরের শিবাজিনগরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করছেন সুজাতা। সুজাতা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ” সরকার স্কুল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি খুশি। অনলাইনে বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়ায় অনেক সমস্যা। ” শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে সামনাসামনি ক্লাসের কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করেন এই প্রধানশিক্ষিকা। আইজা নামে স্কুলটির এক ছাত্রী বলেছে, “স্কুল খোলার আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। আবার কত্তদিন পর বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। “ বেঙ্গালুরুর আরও অনেক স্কুল থেকেই শিক্ষক ও পড়ুয়াদের একই রকম প্রতিক্রিয়া আসছে। এক শিক্ষক এএনআইকে বলেন, “ছেলেমেয়েদের ভীষণভাবে মিস করছিলাম আমরা। ছেলেমেয়েরাও আমাদের। অফলাইন ক্লাসে ফিরে যাওয়ার জন্য সবাই অপেক্ষা করছিলাম। আজ প্রতীক্ষার অবসান ঘটায় আমরা সবাই ভীষণ খুশি। “
কোভিড অতিমারির জেরে ২০২০-এর মার্চ থেকেই দেশ জুড়ে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। দ্বিতীয় ঢেউ হ্রাস পাওয়ার পর মাঝে কয়েকদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও তৃতীয় ঢেউয়ের কারণে ডিসেম্বর থেকে ফের রাজ্যে রাজ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয় সরকার। তবে সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পনেরো থেকে আঠারোর টিকাকরণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। টিকাকরণ হোক আর নাই হোক কোভিডে বাচ্চাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা তিন শতাংশেরও কম বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে পড়ালেখা বন্ধ রাখা যুক্তিহীন বলেই মানছেন চিকিৎসক মহলের একটি বড় অংশ। আর পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চক্ষু চড়কগাছ শিক্ষাবিদদের। প্রায় দুই বছর স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। অতিমারিকালে ভারতে দরিদ্র পরিবারের অসংখ্য শিশু-কিশোর স্থায়ীভাবে স্কুলছুট হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা বিশ্ব ব্যাঙ্কের গ্লোবাল এডুকেশন ডিরেক্টর জাইমে সাভেদ্রার। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে দেরি না করে দেশের অনেক রাজ্যেই স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই স্কুল-কলেজ খুলে যাচ্ছে তামিলনাড়ু, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্রেও।
Photo Credit- middle ( TOI ) . Feature and other images are symbolic.