নিজস্ব সংবাদদাতা : জলপাইগুড়িতে পাল্টি খেলেন বাইশ বছরের বাম কাউন্সিলর। পুরভোটের মুখে সিপিএম ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে। শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ড থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছেন প্রমোদ মন্ডল। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা তৃণমূল দফতরে গিয়ে লাল ঝান্ডা ছেড়ে জোড়াফুলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন প্রমোদ। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া গোপ, চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় ও জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়।
তবে ঝানু সিপিএম নেতার তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছেন না তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। প্রমোদ মন্ডল দলে ঢুকবেন খবর পেয়েই জেলা দফতরে চড়াও হন নয় নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। জেলা নেতৃত্বের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, ওই সিপিএম কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। হার নিশ্চিত জেনেই তৃণমূলে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে মনোনয়নের আশ্বাস পেয়েই যে প্রমোদ মন্ডলের দলত্যাগ তা গোপন নেই শাসকদলের স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কাছে। এঁদের মধ্য অনেকেই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। কাজেই সিপিএম কাউন্সিলরকে দলে নেওয়ার বিরুদ্ধে তৃণমূলের একাংশের এই বিক্ষোভ স্বাভাবিক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পর পর চারবার সিপিএমের প্রতীকে নয় নম্বর ওয়ার্ড থেকে বড় ব্যবধানে জিতেছেন প্রমোদ মন্ডল। পুর রাজনীতিতে বাম শিবিরের অন্যতম মুখ। প্রমোদ সিপিএম ছাড়তে পারেন একসময় তা কল্পনারও অতীত ছিল। তৃণমূলের জামানায় পনেরোর পুরভোটেও হেলায় জিতেছেন। তবে রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কোনও কথা নেই। কিছুদিন থেকেই কানাঘুষো চলছিল প্রমোদ মন্ডল তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। পর পর চারবারের বিজয়ী কাউন্সিলরের জনভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অবকাশ নেই। তবে এই বার আর সিপিএমের প্রতীকে ভোট বৈতরণী পার হওয়ার ঝুঁকি নিতে পারলেন না চারবারের কাউন্সিলর। জলপাইগুড়ি তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশের সহযোগিতা ছাড়া যে প্রমোদের জোড়াফুলের ঘরে ঢোকা সম্ভব হত না তা বলাই বাহুল্য। নয় নম্বর ওয়ার্ডে জয় নিশ্চিত করতেই তৃণমূলসিপিএমের জনপ্রিয় কাউন্সিলরকে দলে টেনে নিল বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। পনেরোর পুরভোটে বিজয়ী পাশের ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলরও দলত্যাগ করে তৃণমূলে আসতে পারেন বলে বাতাসে গুঞ্জন।
Photo and Video – Reporter and Facebook.