আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমেরিকার নিউইয়র্ক নগরীর ব্রঙ্কস এলাকায় একটি বহুতল আবাসনে আগুন লাগার ঘটনায় নিহত ১৯। মৃতদের মধ্যে নয়জন শিশু। আহত কমপক্ষে ৯৫। ৩২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে, যাদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। রবিবার রাত এগারোটা ( স্থানীয় সময় ) নাগাদ ব্রঙ্কসের ১৮১ নম্বর স্ট্রিটের বহুতলটিতে আগুন লাগার কারণ একটি অকেজো হিটার। তেমনটিই জানিয়েছেন নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ড্যানিয়েল নিগ্রো। আবাসনটির চতুর্থতলে একটি বেডরুমে পরিত্যক্ত হিটারটি রাখা ছিল। সেখানে প্রথমে আগুন লাগে। এরপর ১৯ তলা আবাসনের সর্বত্র আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি তলায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে অসুস্থ হয়ে পড়েন আবাসিকেরা।
খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছান ২০০জন ফায়ার ফাইটার। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি হাইড্রোলিক ল্যাডার কাজে লাগিয়ে জানালা ভেঙে দুর্গতদের উদ্ধার করেন দমকলের কর্মীরা। প্রতিটি তলাতেই মানুষকে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে ছটফট করতে দেখেন উদ্ধারকর্মীরা। আগুনে জ্বলতে থাকা বহুতলটির পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে কয়েকজন ফায়ারফাইটার পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। দমকলকর্মীদের সঙ্গে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডারে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় বলে নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিসের প্রধান ড্যানিয়েল নিগ্রো জানান। নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজের তদারকিতে নামেন। তিনি বলেন,” এই ঘটনা নিউইয়র্কবাসীদের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ও বেদনাদায়ক।”
পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল নগরী নিউইয়র্ক। ১৯৯০ সালের পর এটাই নিউইয়র্কের ইতিহাসে সবথেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। সেবার ব্রঙ্কসের একটি নৈশক্লাবে আগুন লাগার ঘটনায় ৮৭ জনের জীবনহানি হয়েছিল। আগুনে পুড়ে যাওয়া আবাসনটি ১৯৭২ সালে তৈরি। পঞ্চাশ বছরের পুরোনো এই বহুতলটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অনেক অভিযোগ ছিল বলে নিউইয়র্ক পোস্ট জানাচ্ছে। এর অধিকাংশ আবাসিকই পশ্চিম আফ্রিকার গাম্বিয়া থেকে আসা মুসলমান অভিবাসনকারী বলে নিউইয়র্কের মেয়র জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নিউইয়র্ক প্রশাসন যথাসাধ্য সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র এরিক অ্যাডামস। ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন নিউইয়র্কে প্রদেশের গভর্নর ক্যাথি হোচুল। তিনি ট্যুইটারে লেখেন, ” আজকের রজনী শোক ও বেদনার। আগামীকাল থেকেই আমরা আবার গড়ে তোলার কাজ শুরু করব। “
Photo and Video Credit – New York Times ( Photos) ABC7 ( Video / Youtube Channel )