তেহরানে নিহত হামাসের শীর্ষ নেতা! গুলি না গাইডেড মিসাইলে মরলেন ইসমাইল হানিয়া?

তেহরানে নিহত হামাসের শীর্ষ নেতা! গুলি না গাইডেড মিসাইলে মরলেন ইসমাইল হানিয়া?


হানিয়াকের মৃত্যুর ঘটনায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের বিবৃতিতেও ইজরায়লকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। হামলাকারীরা বাড়িতে ঢুকে গুলি করে তাঁকে মেরেছে বলে হামাস ও ইরানের সেনাবাহিনীর দাবি। হামলায় হামাস প্রধানের দেহরক্ষী‌ও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইরান সরকারের রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে তেহরানে অবস্থান করছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ইজরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’-দের তালিকায় তাঁর নাম এক নম্বরে। গত এপ্রিলে গাজার পশ্চিম তীরের একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের মিসাইল হামলায় হানিয়ার তিন সন্তান হাজেম, আমির ও মুহাম্মদ ইসমাইল নিহত হয়েছিলেন। হামলায় হানিয়ার তিন নাতি-নাতনির‌ও মৃত্যু হয়েছিল।

মঙ্গলবার‌ই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেইনির সঙ্গে দেখা করেছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ছবি এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত

ইসরায়েলের নিশানায় থাকা এমন একজন শীর্ষ হামাস নেতার বাসা ঘিরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকার কথা। সেই নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে হামলাকারীরা কীভাবে হানিয়ার কাছে পৌঁছাল সেই প্রশ্ন উঠেছে। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল হাদাথের দাবি ঘিরে অবশ্য হানিয়ার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ইসমাইল হানিয়াকে ‘গাইডেড মিসাইল’ ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আল হাদাথ জানিয়েছে। আল হাদাথের খবর বলছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা বেজে‌ ৩০ মিনিটে হানিয়ার তেহরানের বাসভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলে পড়ে। ইরানের ফার্স নিউজ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য সরকারের তরফে বরাদ্দ করা একটি বাসভবনে ছিলেন হামাস প্রধান। মিসাইল বিস্ফোরণে বাসভবনটি মাটিতে মিশে গেছে। হানিয়ার মৃত্যু নিয়ে ফার্স নিউজ সহ ইরানের আরও কয়েকটি মিডিয়াতেও এক‌ই রকম কথা বলা হয়েছে।

ভিডিও: মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া বাসভবনটি হানিয়ার বলে দাবি করা হচ্ছে। এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত ফুটেজ

হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মিসাইল হামলায় নিহত হ‌ওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। ইরানের সামরিক বাহিনী ও ইরান সমর্থিত লেবাননের শিয়াপন্থী মিলিশিয়া বাহিনী হিজবুল্লাহর একাধিক শীর্ষ পদাধিকারীকে এর আগে ‘গাইডেড মিসাইল’ ছুঁড়েই লেবানন ও সিরিয়ার মাটিতে হত্যা করেছে ইজরায়েল। এই ঘটনায় ইজরায়েল সরকারিভাবে এখনও কিছু না জানালেও হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের পেছনে তেল আভিভের হাত আছে বলে নিশ্চিত সবাই।

১৯৬৩ সালে গাজার আল আতি শরণার্থী শিবিরে ইসমাইল হানিয়ার জন্ম। ১৯৮৭ সালে হামাসের প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হামাসের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের সংসদ নির্বাচনে হামাস সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। অপর ফিলিস্তিনি সংগঠন ফাত্তাহর সঙ্গে হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরে পরের বছরই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হানিয়াকে বরখাস্ত করেন আব্বাস। অনেক দিন থেকেই গাজা ভূখণ্ড থেকে সরে গিয়ে ও তুরষ্ক ও কাতারে পালাক্রমে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি।

Feature image is representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *