ডেস্ক রিপোর্ট: দাবানলে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড। নৈনিতালের জঙ্গলে আগুন লেগেছে। শুক্রবার রাতেই আগুন লেগেছিল। শনিবার সকাল থেকে তা নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত ৩১টি স্পটে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ৬০ ঘন্টা পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে নি। বরং নৈনিতাল শহরের দিকেও আগুন ছড়িয়ে পড়ায় উত্তরাখণ্ড প্রশাসন উদ্বিগ্ন। নৈনিতালের হাইকোর্ট কলোনি সংলগ্ন এলাকায় দাবানল চলে এসেছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কাজ করছে। তবে সেনাবাহিনীরও সাহায্য নিচ্ছে প্রশাসন। বায়ুসেনার হেলিকপ্টার উপর থেকে জল ঢেলে আগুন নেভাতে চেষ্টা করছে। নৈনিতাল শহরের হাইকোর্ট চত্বরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। যে সব রাস্তার পাশের জঙ্গলে আগুন জ্বলছে, সেই সব রাস্তাতেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট কলোনি এলাকার উপরেই রয়েছে পাইনের জঙ্গল। সেই জঙ্গলে একবার আগুন ছড়িয়ে পড়লে নৈনিতাল শহরের পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে বলে উত্তরাখণ্ড সরকারের আশঙ্কা। তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত আগুন লাগার কারণে ৩৩.৩৪ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে।
দাবানল না নেভা পর্যন্ত নৈনিতাল হ্রদে বোটিং বন্ধ থাকবে বলে প্রশাসন নির্দেশ জারি করেছে। একটি সেনা ছাউনির গা ঘেঁষে আগুন জ্বলছে। অনেক এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা সরকারের জন্য একটা বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু গত নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত এই হিমালয় রাজ্যে ৫৭৫টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। এতে বন দফতরের মোট ৬৮৯.৮৯ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কোনও প্রাকৃতিক কারণে নয় মূলত মানুষের জন্যই উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলে বারে বারে আগুন লাগে। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে শুক্রবার রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বন দফতর। এরা জঙ্গলে আগুন জ্বালিয়েছিল বলে অভিযোগ। ২০১৯-এ প্রকাশিত দেরাদুনের ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই দাবানলের কারণ মানুষের লাগানো আগুন থেকে। জঙ্গল থেকে যারা ঘাস সংগ্রহ করে থাকে, নতুন ঘাস গজাবে এই আশায় অনেক সময় মরা ঘাসের স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয়। জায়গা বদল করে করে যারা চাষাবাদ করে, তারাও নতুন আবাদ যোগ্য জমি তৈরি করতে জঙ্গলের চারণভূমিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ক্যাম্প ফায়ার থেকেও অনেক সময় জঙ্গলে আগুন ধরে যায় বলে বন দফতরের আধিকারকেরা জানিয়েছেন।
Feature image- Collected.