ডেস্ক রিপোর্ট: ধর্ষণের অভিযোগে ফাঁসলেন জিন্দল গোষ্ঠীর (জেএসডব্লিউ) কর্ণধার বছর চৌষট্টির সজ্জন জিন্দল। অভিযোগকারিণী বছর তিরিশের এক অভিনেত্রী। ওই অভিনেত্রীর অভিযোগ, ২০২২-এর জানুয়ারি মাসে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্সে জিন্দল গোষ্ঠীর সদর দফতরের পেন্ট হাউসে তাঁকে ধর্ষণ করেন সজ্জন। পেন্ট হাউসটি দফতরের ‘টপ ফ্লোরে’ বলে এফআইআরে উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারিণী।
চলতি বছরের গোড়ায় বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়েরের জন্য তিনি গেলেও পুলিশ তা নিতে চায় নি বলে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী। পরে অভিযোগকারিণী আদালতের দ্বারস্থ হন। মুম্বাই হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়ে পুলিশ আইনগত পদক্ষেপ করল ১৩ ডিসেম্বর। গত বুধবার ওই অভিনেত্রীর এফআইআর গ্রহণ করেছে বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স থানা। শিল্পপতি সজ্জন জিন্দলের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৫৪ ( শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কোনও মহিলার উপর সহিংসতা ও জোর খাটানো) এবং ৫০৩ ধারায় (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারিণীর বয়ান রেকর্ড শেষে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া পুলিশ শুরু করেছে বলে খবর। যদিও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলে নি মুম্বাই পুলিশ কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২০২১-এর ৮ অক্টোবর দুবাইয়ে আইপিএলের ম্যাচ দেখার সময় স্টেডিয়ামে সজ্জনের সঙ্গে ওই অভিনেত্রীর প্রথম আলাপ। এর ঠিক দশদিন বাদে ১৮ ডিসেম্বর জয়পুরে এনসিপি নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী প্রফুল পটেলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’জনের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। সেখানে মোবাইল নম্বর বিনিময়ও হয় দু’জনের মধ্যে। এরপর থেকে তারা নিয়মিত ফোনে চ্যাটিং করতেন বলে মহিলা জানিয়েছেন।
অভিযোগকারিণী মুম্বাইয়ের শহরতলীর একটি এলাকায় থাকেন। মুম্বাইয়ে আসার পর দু’জনের মধ্যে ঘনঘন দেখাসাক্ষাৎ হতে থাকে। তাঁর ভাইয়ের একটি সম্পত্তি ক্রয়ে সজ্জন জিন্দল আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে মহিলা এফআইআরে জানিয়েছেন। সামনাসামনি দেখা হলেই আড়ালে নিয়ে গিয়ে সজ্জন তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইতেন বলে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী। ২০২২-এর জানুয়ারির একদিন একটি বৈঠকে অংশ নিতে তিনি জিন্দল গোষ্ঠীর সদর দফতরে গেলে বৈঠক শেষে সজ্জন তাঁকে দফতরের একেবারে ওপর তলায় পেন্ট হাউসে নিয়ে যান বলে মহিলার অভিযোগ। সেখানেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে সজ্জন জিন্দল তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন বলে এফআইআরে জানিয়েছেন অভিযোগকারিণী।
এই ঘটনার পরে সজ্জনের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যেতে চাইলেও সজ্জন তাঁকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। দেখাসাক্ষাৎ করতে চাইলেও সজ্জন সময় দিতেন না। পরে মোবাইলেও তাঁকে ব্লক করে দেন জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার। মোবাইলে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আগে শেষবার ফোনে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল বলে ওই মহিলা জানিয়েছেন। পেন্টহাউসের ঘটনাটি উল্লেখ করলে সজ্জন তাঁকে বলেন, “পুলিশে জানাজানি হলে তোমার বিপদ আছে।” তিনি ‘বিকেসি’ থানায় সজ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন, এই খবর পাওয়ার পর সজ্জনের তরফ থেকে কয়েকজন তাঁকে টাকার বিনিময়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও অভিনেত্রী জানিয়েছেন।
প্রতিক্রিয়া জানতে মুম্বাইয়ের সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা সজ্জন জিন্দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাড়া পান নি। অভিযোগ নিয়ে জিন্দল গোষ্ঠীর তরফেও এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়াশব্দ নেই।
Feature graphic is representational.