ডেস্ক রিপোর্ট: বিদেশ যেতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা। কিন্তু ‘কোল স্ক্যাম’ মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর ‘লুক আউট নোটিশ’ জারি থাকায় আগের বার বিদেশযাত্রা করতে গিয়ে বিমানবন্দর থেকেই ফিরে আসতে হয় অভিষেক পত্নীকে। এবার বিদেশ যেতে চেয়ে সরাসরি দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ তিনি। রুজিরার হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়বেন কপিল সিব্বল। আগামী ১২ জুলাই মামলার শুনানি।
কয়লা কেলেঙ্কারি মামলায় একাধিকবার রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। জেরা এড়াতে পারেন নি অভিষেকও। শেষবার ৮ জুন সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে গিয়েছিলেন রুজিরা। প্রায় চারঘন্টা ধরে তদন্তকারীদের প্রশ্নের জবাব দিয়ে তবে সে’বার ঘরে ফেরেন অভিষেকের স্ত্রী। তার আগে ৫ জুন বিদেশযাত্রার উদ্দেশ্যে দুই সন্তান সহ বেরিয়েও কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন রুজিরা। অভিবাসন দফতর থেকে রুজিরাকে জানানো হয়, তাঁর নামে ইডির ‘লুক আউট’ নোটিশ রয়েছে, বিদেশে যেতে পারবেন না তিনি। বিমানবন্দরেই রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজিরার নোটিশ দেয় ইডি। তিনদিন পরে সিজিও কমপ্লেক্সে যান রুজিরা।
মমতা ও অভিষেকের ক্ষোভ
বিমানবন্দর থেকে অভিষেকের স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষোভ গোপন রাখেন নি অভিষেকও। মমতা বলেছিলেন, “সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি দেওয়া ছিল, যদি কখনও রুজিরা বা অভিষেক বিদেশে যায়, তবে আগে ইডিকে জানালেই হল। সেই অনুযায়ী রুজিরা ইডিকে অনেক আগেই বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে জানিয়েছিল। তখনই না বলতে পারত, ‘তুমি যেও না’। কিন্তু তা না করে মেয়েটাকে দুটো বাচ্চা সহ বিমানবন্দরে আটকে দিয়ে নোটিশ ধরালো যে, ‘তুমি ৮ তারিখ এসো’। কী সব অমানবিক কান্ড চলছে!” অভিষেক অভিযোগ করেছিলেন, “অসুস্থ মাকে দেখতে দেশের বাইরে যাচ্ছিলেন আমার স্ত্রী। আমার সঙ্গে রাজনীতিতে পেরে না উঠে শেষে আমার স্ত্রী ও সন্তানের বিরুদ্ধে লেগেছেন মোদী ও শাহ।”
‘লুক আউট’ নোটিশ থাকলে বিদেশযাত্রায় বাধা স্বাভাবিক
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, কয়লা পাচার মামলায় তাঁকে ও রুজিরাকে রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তদন্তে সহযোগিতা করলে বিদেশযাত্রায় বাধা নেই তাঁদের। যদিও এখনও পর্যন্ত অভিষেক-রুজিরা এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্পষ্ট কোনও আশ্বাস পান নি বলেই আইনজীবী মহলের ধারণা। দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ৫ জুন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট রুজিরার বিদেশ ভ্রমণ আটকে দিয়েছিল- এমন অভিযোগ মানছেন না অনেকেই। কোনও মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিশ থাকলে তাঁর বিদেশ গমনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে তদন্তকারী সংস্থা। এই ক্ষেত্রে অভিযুক্ত সম্পর্কে অভিবাসন দফতরে আগাম জানিয়ে রাখাই নিয়ম। নিয়ম মেনেই বিমানবন্দরে রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকানো হয়েছিল বলে অভিবাসন দফতরের দাবি। ‘লুক আউট’ নোটিশের জেরে বিদেশ যাত্রায় বেরোলেই বিমান বন্দর থেকে ফিরে আসতে হতে পারে- এই আশঙ্কা দূর করতেই এবার সুপ্রিম কোর্টে গেলেন রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Feature Image is representational.