নিজস্ব সংবাদদাতা : জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বানিয়াপাড়া এলাকায় হাতির পাল হানা দিয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ তিস্তা নদীর চরে প্রথম হাতির আনাগোনা লক্ষ্য করেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন বন দফতরের লোকেরা। রাত পর্যন্ত হাতির পালটিকে জায়গা থেকে নড়ানো যায় নি। চরে কাশবনের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে হাতির দল। দলটিতে বাচ্চাকাচ্চা সহ তিরিশটির মতো হাতি আছে বলে বন দফতর জানিয়েছে।
গ্রামে হাতি ঢোকার খবর জানাজানি হতেই পাহাড়পুর-পাতকাটা জুড়ে মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। দলে দলে মানুষ হাতি দেখতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তাদের সামাল দিতে হিমসিম খান পুলিশ ও বনকর্মীরা। হাতির কাছাকাছি না যেতে মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করে বন দফতর। হাতিরা যেখানে অবস্থান নিয়েছে, সেখান থেকে জাতীয় সড়কের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। হাতির কাছে এই দূরত্ব অতিক্রম করা কোনও ব্যাপারই না। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়ককে নিরাপদ রাখতে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে বন দফতর।
মাঠের ধান সবে পাকতে শুরু করেছে। হাতির হানার খবর শুনে তাই মাথায় হাত স্থানীয় চাষীদের। ইতিমধ্যেই হাতির পালটি জমি থেকে মেলা ধান সাবাড় করে ফেলেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাত ভোর হওয়ার আগেই পালটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে না পারলে ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভাবতেও শিউরে উঠছেন গ্রামবাসীরা।
রংধামালি এলাকায় চলছে মহারাজের মেলা। মেলা থেকে প্রচুর জনসমাগমের খবর মিলছে। আশেপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ মেলা অভিমুখে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে হাতির দলটিকে জঙ্গলে ফেরানো নিয়ে উদ্বেগে বন দফতরের আধিকরিকেরা। বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল থেকে হাতির দলটি লোকালয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন বন দফতরের বেলাকোবা রেঞ্জের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত।
বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের ঘনত্ব দিন দিন কমছে। জঙ্গলের ভেতরে হাতিদের খাদ্যের জোগান হ্রাস পাচ্ছে। খাবারের লোভেই এই বন থেকে হাতি বেরিয়ে শহর সংলগ্ন এলাকায় বারে বারে হানা দিচ্ছে বলে বন দফতরের ধারণা। একুশের ১৪ নভেম্বর জলপাইগুড়ি শহরের ভেতরেই ঢুকে পড়েছিল দুটি দাঁতাল। হাতি দুটিকে জঙ্গলে ফেরাতে সেবার যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল বনকর্মীদের।