কর্নাটক: রোগীর পেটে ১৮৭ টি কয়েন! অস্ত্রোপচার করে বের করলেন চিকিৎসকেরা - nagariknewz.com

কর্নাটক: রোগীর পেটে ১৮৭ টি কয়েন! অস্ত্রোপচার করে বের করলেন চিকিৎসকেরা


ডেস্ক রিপোর্ট: চার-পাঁচটি নয়। গুনে গুনে ১৮৭টি কয়েন বের হল পেট থেকে! কর্নাটকে বাগালকোটের হাঙ্গল শ্রীকুমারেশ্বর হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসকেরা দয়ামাপ্পা হরিজন নামে বছর আটান্নর এক পৌঢ়ের পাকস্থলী চিড়ে কয়েনগুলি বের করেন গত রবিবার। ওই ব্যক্তি স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। দুই-তিনমাস ধরে প্রতিদিন একটি-দুটি করে কয়েন গিলেছেন দয়ামাপ্পা।

দিন কয়েক ধরে পেটে প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হ‌ওয়ায় দয়ামাপ্পাকে শনিবার হাঙ্গল শ্রীকুমারেশ্বর হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে নিয়ে যান তাঁর স্বজনেরা। রোগীরা আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও এক্সরে রিপোর্ট দেখেই ডাক্তারদের সন্দেহ হয়, পাকস্থলীতে কয়েন জাতীয় কিছু জমা হয়ে আছে। এন্ডোস্কোপির সময় মনিটরে চোখ রাখতেই ভিরমি খাওয়ার অবস্থা চিকিৎসকদের। তাঁরা দেখতে পান রোগীর পেটের ভেতর গিজ গিজ করছে নানা সাইজের কয়েন।

রোগীর পেট থেকে বের করা ১৮৭ কয়েন। ফটো ক্রেডিট- এএন‌আই ট্যুইট।

রবিবার অস্ত্রোপচার করে ওই পৌঢ়ের পেট থেকে কয়েনগুলি বের করে আনেন চিকিৎসকেরা। মোট ১৮৭ টা কয়েন গোনেন ওটিতে উপস্থিত প্যারামেডিকসরা। এর মধ্যে ৫৬ টি পাঁচ টাকার কয়েন। দু’টাকার কয়েন ৫১ টি। একটাকার কয়েন ৮০ টি। যোগ করে দেখা যায়, ৪৬২ টাকার কয়েন খেয়ে বসে আছেন দয়ামাপ্পা। পলিব্যাগে ভরে ওজন মাপার যন্ত্রে ১৮৭টি কয়েন রাখতেই দেখা যায় ওজন দেড় কেজির কাছাকাছি। চিকিৎসকেরা রোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা বুঝেছেন, স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত এই পৌঢ় গত দুই-তিনমাস ধরে রোজ‌ই একটি-দুটি করে কয়েন খেয়ে নিয়েছেন বাড়ির লোকের নজরের আড়ালে।

স্কিৎজোফ্রেনিয়া একটি জটিল মানসিক অসুখ। এই রোগে আক্রান্তরা বাস্তব জগত থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন কল্পনার দুনিয়ায় বিচরণ করেন। আশেপাশের মানুষ ও স্বজনদের সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ। অযথা ভয় ও আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকা এই রোগের উপসর্গ। স্কিৎজোফ্রেনিয়ার রোগী ঘোরের‌ বশে অনেক কাজ করে ফেলে। দয়ামাপ্পা হরিজন‌ও খেয়ালের বশে কয়েন গলাধঃকরণ করে গেছেন বলে মনে করছেন হাঙ্গল শ্রীকুমারেশ্বর হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসক ডঃ ঈশ্বর কালাবুর্গি। চিকিৎসকেদের যে দলটি জটিল অস্ত্রোপচারটি সেরেছেন ডঃ কালাবুর্গি তাঁদের একজন।

অস্ত্রোপচার শেষে রোগীর সঙ্গে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা। ফটো ক্রেডিট- নিউসলায়ন্স মিডিয়া/ এসসডব্লিউএনএস।

ডঃ ঈশ্বর কালাবুর্গি জানিয়েছেন, ” জমে থাকা কয়েনের ভারে রোগীর পাকস্থলী বড় হয়ে গিয়েছে। অনেকগুলি কয়েন পাকস্থলীর দেওয়ালে গেঁথে ছিল। দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে পেট থেকে সমস্ত কয়েন বের করে আনতে।” রোগীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল আছে এবং তিনি কথা বলছেন বলে ডঃ কালাবুর্গি জানিয়েছেন। তাকে আরও কয়েক দিন নজরদারির মধ্যে রাখতে চান চিকিৎসকেরা।

Feature Image Credit- Twitter/ ANI/ Newslions Media/ SWNS.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *