ডেস্ক রিপোর্ট : রবিবার পুলিশের বাধায় পারেন নি। কিন্তু সোমবার কামিয়াব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথির বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে কলকাতায় আসার পথে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় পৌঁছে গেলেন তিনি। এই মনসাতলাতেই বিজেপির পার্টি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এদিন নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকেই বিষয়টি জানান শুভেন্দু অধিকারী। ভিডিও এবং ছবিও শেয়ার করেন শুভেন্দু। ভিডিওতে গাড়ি থামিয়ে উড়াল সড়কের উপর থেকেই নিচের রাস্তায় জমায়েত হওয়া দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে।
রবিবার দিনই ঘটনাস্থলে যেতে চেয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু তমলুকের রাধামণিতেই তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘন্টা চাপান-উতোরের পর পুলিশ রাস্তা ছেড়ে দিলে কলকাতার পথে রওনা দেন শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়। শুক্রবার দুপুর থেকে পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদকে কটূক্তির অভিযোগে বহিষ্কৃত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার গ্রেফতারির দাবিতে হাওড়া গ্রামীণের বিস্তীর্ণ এলাকায় তান্ডব চালায় বিক্ষোভকারীরা। সরকারি সম্পত্তি, থানা এবং পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উন্মত্ত জনতার রোষের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় অসংখ্য দোকান এবং সাধারণ মানুষের বসতবাড়িও। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা দফতরেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। অফিসটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
শনিবার দলের ভস্মীভূত দফতর পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বাধা পান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। প্রথমে সুকান্তকে তাঁর নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরোতেই বাধা দেয় পুলিশ। পরে সুকান্ত মজুমদার গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার মুখেই তাঁকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিনই দলের রাজ্য সভাপতিকে গ্রেফতারের নিন্দা করে উলুবেড়িয়া যাওয়ার কথা সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
পুলিশের বাধায় রবিবার উলুবেড়িয়া পৌঁছাতে না পারলেও সোমবার সেই উদ্দেশ্য সফল করেন শুভেন্দু। কলকাতায় আসার পথে উলুবেড়িয়ায় ঢুকে পড়ে বিরোধী দলনেতার গাড়ি। ভস্মীভূত পার্টি অফিসটি পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারলেও উড়াল সড়কের উপরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইটারে লিখেছেন- “মনসাতলায় দুষ্কৃতীদের হাতে ভস্মীভূত হাওড়া গ্রামীণের জেলা পার্টি অফিসকে প্রণাম জানাতে থামলাম। পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে এলাকায় প্রবেশ ও প্রস্থানের সব রাস্তা বন্ধ করে রাখায় উড়াল সড়কের উপর থেকেই জেলা বিজেপির সভাপতি অরুণ পাল চৌধুরী সহ অন্যান্য কার্যকর্তাদের সঙ্গে কথা বললাম।” শুভেন্দু ট্যুইটারে আরও লিখেছেন- “আমি তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিলাম যে, অতি শীঘ্রই এই পার্টি অফিসে আমি পা রাখব। বদমাইশদের ছোঁয়ায় অপবিত্র হয়ে যাওয়া চত্বরটিকে গঙ্গাজল দ্বারা শুদ্ধ করা হবে। আমরা আমাদের দলীয় দফতরকে পবিত্র মন্দিরের মতোই শ্রদ্ধা করি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এটাকে পুনর্নির্মাণ করব।”
উড়াল সড়কের নিচে নিচে থাকা দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে গাডির জানালার কাঁচ নামিয়ে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়- “গণতান্ত্রিকভাবে এর বদলা নেবো আমরা।” শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন- “আটকাতে পারে নি। আটকাতে পারল না। আটকাতে পারবেও না।” শুভেন্দুর ভোকাল টনিকে হাওড়া গ্রামীণের বিজেপি নেতারা যে উজ্জীবিত তা বোঝা গেল তাঁদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দলের পতাকা হাতে ‘জয় শ্রী রাম’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। প্রশাসন অনেক চেষ্টার পরেও তাঁর উলুবেড়িয়া যাওয়া আটকাতে ব্যর্থ- এটা বোঝাতেই যে বিরোধী দলনেতা ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন তা স্পষ্ট।
ভিডিও-
Photo and video source- Official twitter of Suvendu Adhikari.