বাইকটিতে দু’জন ছিল। দু’জনেই নেশাড়ু বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা। স্পিড ব্রেকারে বাইকটি ঝাঁকুনি খাওয়ায় শিশুটি পড়ে যাওয়ায় অপহরণের ছক ভেস্তে যায়। দুষ্কৃতীরা পলাতক।
জলপাইগুড়ি : শহর জলপাইগুড়িতে দিনেদুপুরে শিশু অপহরণের চেষ্টা! বুধবার সকালে শহরের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সেনপাড়া ভাটাখানা এলাকার ঘটনা। শিশুটির বয়স মাত্র তিন। সকালে আরও দুই সহপাঠীর সঙ্গে গৃহশিক্ষকের বাড়ি থেকে পড়ে ফিরছিল শিশুটি। বাকি দু’জন নিজেদের বাড়ি ঢুকে যেতেই শিশুটিকে একা পেয়ে জোর করে বাইকে তুলে নেয় দুই যুবক। দ্রুত গতিতে পালাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের বাইকটি রাস্তার স্পিড ব্রেকারে ঝাঁকুনি খেলে বাচ্চাটি বাইক থেকে পড়ে যায়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শিশুটিকে চিনতে পেরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই পালিয়ে যায় দু’জন।
শিশুটির বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত। বাইরে থাকেন। খবর পেয়েই মা রেশমা খাতুন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বাইক থেকে পড়ে গেলেও বাচ্চাটির চোট না লাগায় রক্ষা। মা জানান- ”ছেলে সকালে পড়তে গিয়েছিল। এলাকাতেই গৃহশিক্ষিকার বাসা। আমিই দিয়ে আসি। বন্ধুদের সঙ্গে ফিরে আসে। এদিন বাকি দুই বাচ্চা আলাদা হয়ে যেতেই একলা পেয়ে ছেলেকে বাইকে তুলতে যায় দু’জন। অচেনা দু’জনকে দেখে ছেলে যেতে না চাইলেও তারা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে আমার ছেলেকে বাইকে তুলে নিয়ে স্পিডে রওনা দেয়।”
বাইকটি স্পিড ব্রেকারে ধাক্কা না খেলে অথবা স্থানীয় লোকরা ঘটনাটি দেখতে না পেলে ছেলের পরিণতি কী হত ভেবেই আঁতকে উঠছেন রেশমা খাতুন। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহুয়া দত্ত। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। দুই দুষ্কৃতী নেশাগ্রস্ত ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। জলপাইগুড়ি শহর মাদাকাসক্তে ভরে গেছে বলে নাগরিকদের অভিযোগ। গত কয়েকমাস ধরেই শহরে চুরি-রাহাজানি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। অপরাধের পেছনে মাদকাসক্তদের হাত আছে বলে শহরবাসীর ধারণা।
টাকার জন্য অপহরণের ঘটনা নতুন নয়। তবে জলপাইগুড়ি শহরে আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায় নি। তাও আবার ভরা শহরে দিনের আলোয় তিন বছরের একরত্তি শিশুকে। স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুমান, হয়তো নেশার টাকা জোটাতেই শিশুটিকে অপহরণের ছক কষেছিল দুই মাদকাসক্ত। দুষ্কৃতীদের ধরা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। গত কয়েকমাসে ঘটা একাধিক ঘটনার কোনও সুরাহা করতে ব্যর্থ কোতয়ালি থানা। এখন দেখার শিশু অপহরণের চেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধে জড়িতদের দ্রুত বিচারের অধীনে আনতে সফল হয় কিনা জলপাইগুড়ির পুলিশ।
ভিডিও-
Photo and video- Reporter. Feature image is representational.