মালবাজার : পথে ওঁত পেতে বসেছিল মৃত্যু। স্কুলে পৌঁছানোর আগেই ছিনিয়ে নিল দশ বছরের বাচ্চাটাকে। শনিবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণটাই চলে গেল প্রিয়া টোপ্পোর। জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমার সাইলি চা বাগানের ঘটনা।
বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল বাগানের রাস্তার জমা জলে। সকালের দিকে বৃষ্টি হচ্ছিল। সাড়ে আটটা নাগাদ ছাতা মাথায় স্কুলের পথে রওনা দিয়েছিল প্রিয়া। ফ্যাক্টরি লাইনের রাস্তায় জলে পা পড়লেই বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয় মেয়েটি। আশেপাশে যে কয়জন ছিলেন তারা চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারে নি পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীটিকে। ঘটনাস্থলেই ঝাঁকুনি দিতে দিতে কিছুক্ষণের ভেতর সবার চোখের সামনেই মারা যায় প্রিয়া টোপ্পো। সাইলি চা বাগানের চেল লাইনে প্রিয়া টোপ্পোর বাড়ি। বাবা রতন টোপ্পো চা বাগানের শ্রমিক। বাগানের বাজার লাইনের মনসা স্কুলে পড়ত প্রিয়া।
রাতে কোনও সময় বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পথে পড়েছিল। প্রশ্ন হল দুর্ঘটনা ঘটার আগেই কেন তার সরিয়ে নেয় নি বিদ্যুৎ দফতর? স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে তারটি পড়ে থাকলেও সরানোর ব্যবস্থা করে নি বিদ্যুৎ দফতর। এমনকি শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেও চার ঘন্টা বাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির মালবাজার ডিভিশনের কর্মীরা। প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন চা বাগানের বাসিন্দারা। বিদ্যুতের লাইনে কোনও রক্ষনাবেক্ষণ হয় না বলে তাদের অভিযোগ। তার পুরোনো হয়ে ছিঁড়ে পড়াতেই দুর্ঘটনা- দাবি স্থানীয়দের।
বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্মী ও আধিকারিকদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। মাল থানা থেকে পুলিশ গিয়ে জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য বাগান শ্রমিকদের কাছে ক্ষমা চান বিদ্যুৎ দফতরের মালবাজার ডিভিশনের ম্যানেজার নবীন কুমার। পুলিশ ছাত্রীর দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়িতে পাঠায়।
ভিডিও-
Photo & Video- Reporter.