আজ ধনতেরাস । কার্তিক মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে ধনতেরাস উদযাপিত হয় । ধন মানে সম্পদ । তেরাসের উদ্ভব ত্রয়োদশী শব্দ থেকে । ধনতেরাসকে বলা হয় ধনাত্রয়োদশী বা ধনবত্রী ত্রয়োদশীও। দীপাবলীর দু‘দিন আগে উত্তর ও পশ্চিম ভারত জুড়ে ধনতেরাস উৎসব হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে উদযাপিত হয়। এদিন ধনসম্পদ কামনায় ধনদৌলতের দেবতা কুবেরের আরাধনা করে থাকেন গৃহস্থ । ধনতেরাসের রাতে দেবী ধনবত্রী বা মা লক্ষ্মীরও পুজো করেন অনেকে।
বাঙালি ধনতেরাস পার্বন থেকে দূরেই থাকত । আগে পশ্চিমবঙ্গের অবাঙালি হিন্দু সমাজ বিশেষ করে গুজরাটি ও মারওয়াড়ি সম্প্রদায়ের মধ্যে ধনতেরাস সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু যেকোনও সম্প্রদায়ের উৎসব থেকেই বেশি দিন দূরে থাকতে পারে না উৎসবপ্রিয় বাঙালিহিন্দু । ধনতেরাস উপলক্ষে সোনা , রূপা সহ যেকোনও ধরণের মূল্যবান সামগ্রী কেনাই রেওয়াজ । মারওয়াড়ি , গুজরাটি পরিবারের মেয়ে বউরা তো কেনেনই এমনকি বাঙালি পরিবারেও এখন নতুন জিনিস কিনে ঘরে আনা হয় ।
এবার উৎসব মরশুমেও কোভিড অতিমারির অত্যাচার থেকে মানুষের রেহাই নেই । করোনার কারণে অনেকটাই ম্লান ধনতেরাস পার্বনও । সংক্রমণ ও লকডাউনের ধাক্কায় দেশের অর্থনীতি রীতিমতো ডাউন । ব্যবসা বাণিজ্য লাটে । বাজারের অবস্থা শোচনীয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন । আট মাস পরেও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয় নি। যদিও সংক্রমণের মধ্যেই জীবনে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনার প্রাণপণ চেষ্টা করছে মানুষ। ধনতেরাস সংসারে সমৃদ্ধি কামনার উৎসব । এই সঙ্কটকালে আবার ঘুরে দাঁড়াতেই হবে সবার হাতে হাত রেখে । তবেই অনটন দূর হবে। লক্ষ্মী আসবেন ঘরে ঘরে। আজ ধনতেরাস । কাল শ্যামা পুজো । পরশু আলোর উৎসব দীপাবলী । এই উৎসব মরশুমেই অন্ধকার কেটে আবার আলোর কিরণ দেখা দেবে এটাই সবার প্রার্থনা ।