হাইলাইটস –
- উত্তরবঙ্গের মানুষের সেন্টিমেন্ট পৃথক রাজ্যের পক্ষে – দাবি নিশীথ প্রামাণিকের ।
- জনগণের আবেগের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না জনপ্রতিনিধিরা – মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।
- গণতন্ত্রে জনগণ যা চায় তাই হয় – মালদহে মন্তব্য নিশীথের ।
- উত্তরঙ্গের যতটুকু উন্নয়ন হওয়া উচিত ছিল তা হয় নি – জন বার্লা-দিলীপ ঘোষ- নিশীথ প্রামাণিকের এক সুর।
মালদহ : ‘ কলকাতায় একটি ফ্লাইওভারের যা বাজেট থাকে পুরো উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে সেই বাজেট থাকে ‘ – এই কারণেই উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে পৃথক রাজ্যের আবেগ উঠেছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক । মঙ্গলবার মালদহে শহিদ সম্মান যাত্রার সূচনায় সাংবাদিকদের সামনে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য নিয়ে জন বার্লা ও দিলীপ ঘোষের সুরেই সুর মেলালেন নিশীথ । শনিবার জলপাইগুড়িতে একই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সামিল হয়ে বার্লার পাশে বসে উত্তরবঙ্গে পৃথক রাজ্যের দাবিকে বৈধ বলেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও ।
মালদহে বিজেপির কর্মসূচিতে নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে ছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ ডঃ সুকান্ত মজুমদারও । তিনদিন আগে দলের রাজ্য সভাপতি যেই লাইনে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেছিলেন এদিন ঠিক সেই লাইনেই আলাদা রাজ্যের সমর্থনে বক্তব্য রাখতে দেখা গেল নিশীথ প্রামাণিককে । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ উন্নয়নের দিক থেকে কেউ যদি প্রশ্ন করেন তবে আমি বলব উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল বা উচিত ছিল যে উন্নয়টা করার সেটা হয় নি । জনগণ আমাদেরকে নির্বাচিত করে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন । স্বাভাবিক ভাবেই জনগণের যে আবেগ আমরা সেই আবেগ বা সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে যাব না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা তাদের আবেগকে সম্মান করি । ‘
বিজেপির মধ্যে প্রথম পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। তখনও তিনি কেন্দ্রে মন্ত্রী হন নি । মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেও পৃথক রাজ্য নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায় নি বার্লার । শনিবার জলপাইগুড়িতে আলাদা রাজ্য নিয়ে জন বার্লার সমর্থনে সওয়াল করতে দ্বিধা করেন নি দিলীপ ঘোষ । দিলীপের মন্তব্যের পরেই রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের সৃষ্টি হয় । রাজ্য ভাগ নিয়ে দিলীপ ঘোষের উল্টো সুরে কথা বলতে দেখা যায় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে । নিশীথ প্রামাণিকের মন্তব্যের পরেও রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের পারদ চড়েছে স্বাভাবিক ভাবেই।
রাজ্য ভাগ বা পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য নিয়ে রাজনীতিতে বিজেপি ইচ্ছে করেই খানিকটা ধন্ধ জিইয়ে রেখেছে বলে মনে করছেন অনেকেই । উত্তরবঙ্গ বরাবরই বিজেপির শক্ত ঘাঁটি । উত্তরবঙ্গে আটটি লোকসভার মধ্যে সাতটিই বিজেপির দখলে । বিধানসভা ভোটে দক্ষিণবঙ্গে মুখ পুড়লেও উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের থেকে অনেকটাই এগিয়ে বিজেপি । কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের সময় উত্তরবঙ্গ থেকে দু’জন সাংসদকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী । এর পিছনেও অনেক অঙ্ক রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । চব্বিশে লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে উত্তরবঙ্গে দলের শক্ত ঘাঁটিতে পায়ের তলার মাটি যাতে মমতা কোনও মতেই সরিয়ে না দিতে পারেন , সেই লক্ষ্যেই একেক বার এক এক নেতার মুখ দিয়ে ঘুরিয়ে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব উস্কে দিচ্ছেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ ।
Photo Credit – Official FB page of Nisith Pramanik.