ফাঁস ফরিদাবাদ মডিউল, হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে চার চিকিৎসকের জিহাদ!

ফাঁস ফরিদাবাদ মডিউল, হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে চার চিকিৎসকের জিহাদ!


চার জিহাদি চিকিৎসক: ড. উমর উন নবি, ড. মুজাম্মিল শাকিল, ড. আদিল আহমেদ রাথর,ও ড. শাহিন শহিদ। ছবি: এন‌এনডিসি

বিস্ফোরণে উমরের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঘটনার তদন্তেকারীরা অনুমান করছেন, হয় দুর্ঘটনা বশত উমরের গাড়িতে বোঝাই ‘অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট’ বিস্ফোরিত হয়েছে, নয়তো উমর পরিকল্পনা করেই ‘ফিঁদায়ে’ হামলা ঘটিয়েছেন। তদন্ত আরও গভীরে গেলে বিস্ফোরণের কারণ আরও স্পষ্ট হবে বলে আশা করছেন দিল্লি পুলিশ ও এন‌আইএ-র আধিকারিকেরা। ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ‘হুন্ডাই আই-২০’ গাড়ি চালকের দেহটি যে আসলেই ড. উমরের, তা নিশ্চিত হ‌ওয়ার জন্য দেহাংশ থেকে ডিএন‌এ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

বিস্ফোরণ হ‌ওয়া গাড়িটিতে চালকের আসনে ড. উমর উন নবি ছিলেন বলে পুলিশের সন্দেহ। সংগৃহীত ছবি

বুধবার সকালে পুল‌ওয়ামার একটি হাসপাতালে উমর উন নবির মায়ের ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নিহত গাড়ি চালকের ডিএন‌এ-র সঙ্গে উমরের মায়ের ডিএন‌এ মিলিয়ে দেখবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উমরের বাবা গুলাম নবি ভাটকেও আটক করেছে কাশ্মীর পুলিশ। ড. উমর উন নবিকেই ফরিদাবাদ মডিউলের মাথা বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। অর্থাৎ ড. উমর উন নবি, ড. আদিল আহমেদ রাথর, ড. মুজাম্মিল শাকিল ও ড. শাহিন শহিদ, এই চারজন জঙ্গি সংগঠন ‘জ‌ইশ-ই-মহম্মদ’ পরিচালিত এক‌ই মডিউলের অন্তর্ভুক্ত। দিল্লির অদূরে ফরিদাবাদে বসে এঁরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করছিলেন বলে তদন্তে উঠে আসছে।

ড. মুজাম্মিল আহমেদ, ড. আদিল আহমেদ রাথর ও ড. শাহিদ শহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম দু’জন কাশ্মীরের বাসিন্দা কিন্তু নারী চিকিৎসক শাহিনের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখন‌উয়ে। ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজে কর্মরত এই নারী চিকিৎসক‌ও জিহাদে অংশ নিয়ে হিন্দুস্তানকে ধ্বংস করতে চান। গত ১৯ অক্টোবর নিষিদ্ধ সংগঠন ‘জ‌ইশ-ই-মহম্মদ’-এর হয়ে পোস্টার সাঁটানোর সময় ড. আদিল আহমেদ রাথরকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। আদিলকে জেরা করেই ফরিদাবাদে তাদের ঘাঁটির কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।‌

সোমবার সকালে ফরিদাবাদে অভিযান চালিয়ে ৩৬০ কেজি ‘অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট’ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মজুত আরও বিস্ফোরকের খোঁজ পায় তদন্তকারী দল। সব মিলিয়ে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। যা দিয়ে কতগুলো ‘আরডিএক্স’ বানানো যেত কল্পনা করে শিউরে উঠছেন নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির দুঁদে গোয়েন্দারাও। ফরিদাবাদ মডিউলের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে পারভেজ স‌ইদ নামে আরও একজনকে খুঁজছে পুলিশ। শাহিন ও পারভেজ সম্পর্কে ভাই-বোন বলে জানা গেছে।

ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজ ও ইউনিভার্সিটিকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন তদন্তকারীরা। অর্থাৎ আল-ফালাহে কর্মরতদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ নন বরং আল-ফালাহ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই জঙ্গিযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ। আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির ল্যাবরেটরিতে আরডিএক্স নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলত বলে ইঙ্গিত পাচ্ছে পুলিশ। ফরিদাবাদ মডিউলের কথা জানাজানি না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না জিহাদি নেটওয়ার্কের শিকড় দেশের কত গভীরে পৌঁছে গেছে।

Feature image is representational and designed by NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *