ডেস্ক রিপোর্ট: বৃহস্পতিবার তমলুকে ভোট প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলে এসেছেন, পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের থেকেও বড় মন্দির দীঘাতে বানাবেন তিনি। মমতার এই বক্তব্যে বিস্মিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। “সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেখাবো যে পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকেও এটা আরও বড় মন্দির হয়েছে”- মমতার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বড় পোস্ট দিয়েছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা মনে করেন, অতি দর্পে সনাতন ধর্মের অন্যতম পীঠস্থান শ্রীক্ষেত্রের জগন্নাথ ধামের মাহ্যাত্মকেই অস্বীকার করে বসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
পুরীর প্রভু জগন্নাথদেবকে ঘিরে যুগ যুগান্তর ধরে ভক্তদের শ্রদ্ধা-ভক্তি, সংস্কার, আবেগ ও ভালবাসা জড়িয়ে আছে। মমতা যদিও মনে করেন, পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের থেকেও দীঘাতে বড় মন্দির বানাবেন তিনি। তমলুকের সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “দীঘাতে আপনারা জানেন তো পুরীর জগন্নাথ মন্দির যত বড়, তত বড় মন্দির তৈরি হচ্ছে। কী দেখেছেন? যাবেন কিন্তু যেদিন উদ্বোধন হবে। আমরা ‘নট কমপ্লিট’ করি না। অসম্পূর্ণ কাজ করি না রাজনীতিতে ছবি তুলবার জন্য। আমাদের ঠাকুরও এসে গেছে। কিন্তু যেহেতু ইলেকশন, আমি এখন করব না। আমার কিছু কাজ বাকি আছে। আমি ইলেকশনের পর মন্দিরটা তৈরি হয়ে গেলে আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেখাবো যে, পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকেও এটা আরও বড় মন্দির হয়েছে এবং তার ভোগঘর থেকে শুরু করে সবকিছু।”
শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে লিখেছেন, “জনশ্রুতি, লোকগাথা, পৌরাণিক কাহিনী ও ইতিহাসের আবরণে মোড়া প্রাচীন ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকেও নাকি “বড় মন্দির” বানাচ্ছেন মাননীয়া ! দম্ভ যখন মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তখন মানুষ আবোল তাবোল বকে।”
শুভেন্দুর পুরো পোস্টটাই দেখে নিন-
সারা বিশ্বের অনেকেরই মত বাঙালির প্রাণের শহর উৎকলের শ্রীক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ ধাম সনাতন ধর্মের অন্যতম পীঠস্থান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগন্নাথ অবতারে পুরীর মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন, সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই বলভদ্র এবং ছোট বোন সুভদ্রাও একই আসনে অধিষ্ঠান করেন। পুরীর রথযাত্রা উপলক্ষে কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয় রাজপথ, রথ টানার জন্য জনপ্লাবন সৃষ্টি হয় প্রতি বছর।
কয়েক শতাব্দী পূর্বে নির্মিত অলৌকিক এই মন্দিরের সঙ্গে কত আশ্চর্যজনক ঘটনা জড়িত তার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান ও দিতে ব্যর্থ। যেমন মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকা লাগানো থাকে, সবসময় যে দিকে হাওয়া চলে তার বিপরীত দিকে পতাকাটি ওড়ে। জগন্নাথ দেবের মন্দির প্রায় ৪ লক্ষ বর্গফুট এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এবং ২১৪ ফুট উঁচু, অথচ এই মন্দিরের চূড়ার কোনও ছায়া দেখা যায় না।
মন্দিরের চূড়ায় একটি চক্র লাগানো রয়েছে, যে কোনও প্রান্ত থেকে ওই চক্রের দিকে তাকান, মনে হবে চক্রটি আপনার দিকেই ঘোরানো। চক্রটির ওজন প্রায় এক টন। ১২ শতকে মন্দির নির্মাণের সময় চূড়ায় কিভাবে বসানো হয়েছিল, তা এক রহস্য, কারণ সেই সময় প্রযুক্তি কতটা উন্নত ছিল তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জনশ্রুতি, লোকগাথা, পৌরাণিক কাহিনী ও ইতিহাসের আবরণে মোড়া প্রাচীন ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকেও নাকি “বড় মন্দির” বানাচ্ছেন মাননীয়া ! দম্ভ যখন মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তখন মানুষ আবোল তাবোল বকে।
মহাপ্রভু জগন্নাথ দেব ওনাকে সুবুদ্ধি প্রদান করুন এই প্রার্থনা করি।
জয় জগন্নাথ 🚩
Feature graphic is representational and created by NNDC.