কলকাতা: তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে দিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মিছিলে পুলিশের আপত্তি শুনল না হাইকোর্ট। আগামী শনিবার ( ৬ মে, ২০২৩) বকেয়া মহার্ঘ ভাতা সহ অন্যান্য দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের মহামিছিল। ওইদিন শহিদ মিনারে যৌথ মঞ্চের অবস্থান ১০০ দিনে পড়বে। হরিশ মুখার্জি রোড দিয়ে মঞ্চের মিছিল যাওয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছিল কলকাতা পুলিশ। হরিশ মুখার্জি রোডেই অভিষেকের বাড়ি। বরাবরই এই রাস্তা নিয়ে অতি সাবধানী লালবাজার। হরিশ মুখার্জি রোড দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ায় পুলিশের অনুমতি না মেলায় হাইকোর্টে যান সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতারা। মামলা ওঠে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে হরিশ মুখার্জি রোড দিয়েই শর্তসাপেক্ষে মিছিলের অনুমতি দিলেন বিচারপতি।
শনিবার দুপুর বারোটায় হাজরা মোড়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জমায়েত হওয়ার কথা। কিন্তু রুট নিয়ে গোল বাঁধে পুলিশের সঙ্গে। মিছিলের রুটে হরিশ মুখার্জি রোড আছে জেনেই বেঁকে বসে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের তরফে ডিএ আন্দোলনকারীদের তিনটি বিকল্প পথের প্রস্তাব দেওয়া হলেও হরিশ মুখার্জি নিয়ে অনড় থাকেন আন্দোলনকারীরা। হরিশ মুখার্জি রোডেই অভিষেকের বাড়ি। কিন্তু ঠিক ওই কারণেই মিছিল নিয়ে আপত্তি কিনা, তা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে স্পষ্ট করে জানায় নি কলকাতা পুলিশ। যদিও অভিষেকের বাড়ি থাকায় হরিশ মুখার্জি রোড নিয়ে পুলিশ যে ৩৬৫ দিনই অতিরিক্ত রকমের স্পর্শকাতর, তা কমবেশি সবারই জানা। পুলিশ অভিষেকের বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিলে ছাড় দেবে না, বুঝতে পেরেই হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন উদ্যোক্তারা।
এদিন দুপুরে মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সরকারি আইনজীবীর কাছে কাছে জানতে চান, “শহরের ব্যস্ত এলাকা হাজরা মোড়ে প্রতিদিনই ধর্না, মিছিল, বিক্ষোভ লেগে থাকে। তা, ৬ তারিখের মিছিলে হরিশ মুখার্জি রোড নিয়ে পুলিশের এত আপত্তি কেন?” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কথা চেপে গিয়ে সরকারি আইনজীবী পাল্টা প্রশ্ন তোলেন,”ওই পথ স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। সেখান দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দায় নেবে কে?” হরিশ মুখার্জি রোডে সবসময় ১৪৪ ধারা জারি থাকে বলেও আদালতকে জানান সরকারি আইনজীবী। যদিও সরকার পক্ষের বক্তব্যের বিরোধিতা করে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন, “মিছিলের আবেদন জমা পড়ার পরেই ৩ মে থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা ঘোষণা করেছে পুলিশ।”
দুই পক্ষের দাবি-পাল্টাদাবি শোনার পর বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, “সকলে যে আশঙ্কা করছে, আদালত তা বুঝতে পেরেছে। ওই এলাকায় কোনও রকম অশান্তি হবে না, সেইভাবেই মিছিল করতে হবে। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে হরিশ মুখার্জি রোডের উপর দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল শেষ করতে হবে।” মিছিল থেকে কোনও রকম উষ্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া যাবে না বলে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন। হরিশ মুখার্জি রোডে সারা বছর পুলিশের নজরদারি থাকায় ওই এলাকাই শহরের সবচেয়ে শান্ত এলাকা বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
Feature Image is representational.