পলিটিক্যাল ডেস্ক: কুলহারা মুকুল! মমতা বলছেন, আরে উনি তো বিজেপির বিধায়ক। সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা- কালীঘাটে মমতা-অভিষেকের পাশে মুকুলের ছবি সবাই দেখেছে। বৃহস্পতিবার, মুকুল রায়কে কোনও রকমের রাখঢাক না করেই ধোঁকাবাজ বলে কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ। ৭২ ঘন্টা হতে চলল, মুকুল রায় দিল্লিতে। মনে বড় আশা- আবার হাতে নেবেন পদ্ম পতাকা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেপি নাড্ডা দূরের কথা, কেন্দ্রীয় বিজেপির মাঝারি মাপের কোনও নেতার সঙ্গে মুকুলের দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে কিনা স্পষ্ট নয়। এদিন চুঁচুড়ার আদালতে একটি মামলায় জামিন নিতে গিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে সাংবাদিকেরা মুকুল প্রসঙ্গ তুলতেই শব্দবোমার বিস্ফোরণ দিলীপের মুখে।
ওঁদের বাপব্যাটায় ঝামেলা আছে
দিলীপ ঘোষ বলেন, “আরে উনি তো একজন ধোঁকাবাজ। আমাদের দল সম্মান দিল। কত বড় পদ দিল। আর উনি আমাদের সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে ধোঁকা দিয়ে চলে গেলেন তৃণমূলে!” দিলীপ আরও বলেন, “লোকটা আমাদের কর্মীদের মনোবল যেভাবে ভেঙে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন, তাতে আমাদের দলের ক্ষতি হয়েছে।” মুকুলের মতো পাল্টিবাজদের জন্য পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির মান নেমে গেছে বলেও আক্ষেপ করেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি বলেন, “ওঁদের বাপ-ব্যাটায় ঝামেলা আছে। কখন কে কী বলেন, ঠিক নেই। কে ঠিক বলছেন আর কে ভুল বলছেন, বোঝার উপায় নেই।”
তৃণমূলে গেলেই লোকের কত কী কমে যায়
বাবার শরীরে পটাশিয়াম-সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায় বলে একাধিকবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শুভ্রাংশু রায়। দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, “তৃণমূলে করলে কারও অক্সিজেন নেমে যায়। কারও পটাশিয়াম-সোডিয়াম কমে যায়। কারও আবার হাইড্রোজেনের ঘাটতি হয়। কার কী কমল-বাড়ল আমি কীভাবে জানব। চিকিৎসকেরা বলতে পারবেন।” দিলীপ মনে করেন মুকুল রায় কিম্বা তাঁর ছেলের কথায় কিছু যায় আসে না। মুকুলের দিল্লিযাত্রাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি। তিনি বলেন,” অনেক দিন ঘরে বসে বসে একঘেয়েমি লাগছিল, একটু দিল্লিতে বেড়াতে গেছেন। উনি পুরোনো সাংসদ। মন্ত্রীও ছিলেন। যেতেই পারেন দিল্লি। এখন দিল্লিতে বসে কী বলছেন। তার কী মানে হয়। সেটা আমরা বুঝতে পারছি না।” দিলীপের কটাক্ষ- “এই ধরণের নেতাদের কথার অনেক মানে হয়। যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা উনার কথার মানে বুঝতে পারবেন।”
দিলীপ ঘোষ যখন রাজ্য বিজেপির সভাপতি, ২০১৭-র নভেম্বরে দিল্লিতে পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। বিজেপিতে দিলীপ-মুকুল ঠান্ডাযুদ্ধের কথা গোপন থাকে নি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পাঁচ-ছয় মাস আগে মুকুলকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতির পদও দেওয়া হয়েছিল। কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছিলেন মুকুল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতেই দলে চুপ মেরে যান চাণক্য। একুশের ১১ জুন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কালীঘাটে গিয়ে তৃণমূলে ফিরে আসেন মুকুল রায়। আচমকা মুকুলের এই পদক্ষেপ দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতাদেরও অপ্রস্তুত করে দিয়েছিল। মুকুল ফের বিজেপিতে ফেরার চেষ্টা করতেই মুকুল সম্পর্কে দিলীপ ঘোষের চাঁচাছোলা জবাবকে যথার্থ বলেই মনে করছেন দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা।
Feature Image is representational.