ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলায় এবারের রামনবমী ঘিরে রাজ্য বিজেপিকে ফের উজ্জীবিত দেখালো। কলকাতা থেকে জেলা- সর্বত্রই বড় বড় মিছিল হয়েছে। মিছিল শুধু বহরেই বড় ছিল না অংশগ্রহণকারীদের উদ্দীপনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলায় বিজেপির জনভিত্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই রামনবমীর জৌলুস বৃদ্ধি। উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগেও সাড়ম্বরে রামনবমী পালন করেছিল রাজ্য বিজেপি। বিশে করোনার কারণে পালন করা যায় নি। একুশে বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যেই রামনবমী পড়েছিল। কাজেই মিছিলে লোকবল বাড়াতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেন নি বিজেপি নেতৃত্ব। তবে বাইশের রামনবমীতেও হারের ধাক্কা সামলে ওঠা যায় নি। তাই সে’বার সর্বত্র সমান নজর দিতে পারেন নি সুকান্ত মজুমদারেরা।
তেইশের রামনবমী যে জমকালো হবে, তার আভাস আগেই মিলেছে। রামনবমী পালনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে- বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেও তেমনই নির্দেশ ছিল ৬, মুরলীধর সেন লেনকে। রামকে ভারতবর্ষের চিরন্তন সত্ত্বা ও সুশাসনের প্রতীক বলে মনে করে সংঘ পরিবার। সারা দেশেই রামনবমী ঘিরে একটা আলাদা উদ্দীপনা কাজ করে হিন্দুত্ববাদীদের মহলে। বাংলাও যেন তার ব্যতিক্রম না হয়, সেদিকে অমিত শাহের নজর থাকাই স্বাভাবিক। এই বছরের রামনবমী এমন সময়, যখন নিয়োগ দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুতে বড় বেকায়দায় পড়েছে বাংলার শাসকদল। সাগরদিঘিতে তৃণমূলের বিশ্রী হারের পর রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তবে কি সংখ্যালঘুদের আস্থাও হারাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সাগরদিঘিতে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থীর বড় ব্যবধানে জয়ের পর থেকেই বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে ফের চর্চা শুরু রাজনীতিতে।
রাজ্যে এখন বিরোধীদল বলতে বিজেপি। একুশে বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দুঃসময়ে বাম-কংগ্রেসের পালে হাওয়া লাগলে আখেরে বিজেপির ভোটেও যে ক্ষয় ধরবে, তা সাগরদিঘি সহ কয়েকটি নির্বাচনের ফল থেকেই প্রমাণিত। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল বিরোধিতার পাশাপাশি হিন্দুত্বের অস্ত্রেও শান দিয়ে রাখতে ঘাটতি রাখছেন না রাজ্য বিজেপির নেতারা। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করতে রামনবমীর চেয়ে বড় রাজনৈতিক ইভেন্ট নেই। তাই বাইশের রামনবমীতে শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ হাত ছাড়া করার কোনও প্রশ্নই আসে না সুকান্ত-শুভেন্দুদের কাছে।
রামনবমীতে দিনভর ঠাসা কর্মসূচির মধ্যে কেটেছে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির অন্যান্য নেতাদের। চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ দলের সকল সাংসদও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় রামনবমী পালনে জোর তৎপর ছিলেন। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ – সর্বত্র নাড়া উঠেছে একহি নাড়া একহি নাম, জয়শ্রী রাম জয়শ্রী রাম। বহু জায়গায় অস্ত্র হাতে মিছিল হয়েছে। মিছিলের জনসমাগম দেখে খুশি বিজেপি নেতারা।