পলিটিক্যাল ডেস্ক: আরজি কর কান্ডের বছর ঘোরার আগেই কসবা ল কলেজ কান্ড! পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে কি নারীর কোনও নিরাপত্তাই নেই? সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা সকলেই টিএমসিপির সদস্য। যাকে বলা হচ্ছে ঘটনার মাথা, কলেজের প্রাক্তনী সেই মনোজিৎ মিশ্র আবার শাসকদলের উঠতি নেতা। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য- তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সকলের সঙ্গেই মনোজিতের দহরম মহরম ছিল বলে জানা যাচ্ছে। তৃণমূলের বড় বড় নেতাদের সঙ্গে কসবা ধর্ষণকান্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিতের ছবিও সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে। রবিবার নন্দীগ্রামে কসবার ঘটনায় তৃণমূলকে ধুয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

নন্দীগ্রামের নারায়ণচকে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু বলেন, “মমতাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না সরাবেন, কোনও কন্যা, বোন, দিদি, মা কারও কোনও সুরক্ষা নেই। কত দৃশ্য দেখবেন আপনি? হাঁসখালি; মমতা ব্যানার্জি বলছে, ওটা লাভ অ্যাফেয়ার্স, রেপ ছিল না! কালিয়াগঞ্জ; বলছে মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা ছিল। কত উদাহরণ দেবেন? অভয়ার বাবা-মাকে গিয়ে বলছেন, দশ লাখ তো দেওয়া যেতেই পারে!” এদিকে কসবা কান্ডের পর এখনও মুখ খোলেন নি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতা বলেন, “মুখ বন্ধ কেন? ফাঁকা দিঘা থেকে পালিয়েছে। রথের চাকাও গড়ায় নি। নারকেলও ফাঁটে নি।”
কসবার আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে তিনি কন্যা সুরক্ষা যাত্রায় নামবেন বলে জানিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সামগ্রিকভাবে আমাদের রাজ্যের কন্যারা মমতা ব্যানার্জির আমলে সুরক্ষিত নয়। আগামী কয়েক সপ্তাহে যত কর্মসূচি আমার থাকবে, আমি সব কর্মসূচিকে কন্যা সুরক্ষা যাত্রায় পরিণত করব। সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘কন্যা সুরক্ষা যাত্রা’ নামে আমি এইসব কর্মসূচি পালন করব। বাংলায় এখন কন্যাদের, বোনেদের, দিদিদের বাঁচানোটাই সবথেকে অগ্রাধিকার বলে আমি মনে করি।”
জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য ড. অর্চনা মজুমদারকে রবিবার কসবা ল কলেজে ঢুকতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, “সকলকেই বাধা দেবে। আটকে রাখবে। আমাদের রাজ্য সভাপতিকেও আটকে রেখেছিল। মমতা ব্যানার্জি কথা বলতে দেবে না। প্রতিবাদ করতে দেবে না। জরুরি অবস্থা ঘোষণা না করলেও জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি।” ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনার দায় প্রকারান্তরে নির্যাতিতার ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। মদন বলেছেন, “‘‘ওই মেয়েটি যদি ওখানে না যেত, এই ঘটনা তো ঘটত না। যাওয়ার সময়ে যদি কাউকে বলে যেত, দু’জন বান্ধবীকে নিয়ে যেত, বাবা-মাকে নিয়ে যেত, তা হলে এটা ঘটত না। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে অভিযুক্তেরা।’’
সাংবাদিকরা মদন মিত্রের মন্তব্যের উপর তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শুভেন্দু বলেন,”এইসব মদ-মাতালদের প্রশ্ন আমাকে করবেন না তো! রেজিস্টার্ড মাতাল। আমি ওর কথার উত্তরই দেবো না।” দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা নিয়ে রবিবারও মমতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “দেখলেন না দিঘা ফাঁকা। জালি হিন্দু। হালাল মিষ্টি খাওয়াতে এসেছিল। লোকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। কেউ প্রসাদ ঘরে নিয়ে গিয়ে খায় নি।”
Fearure graphic is representational and created by NNDC.